নাম ছাড়া কিছুই বলতে পারছেন না তিনি

সোমবার (৩১ জানুয়ারি) রাত সোয়া ১১টা। সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের চতুর্থ তলার মহিলা সার্জারি ওয়ার্ড থেকে হঠাৎ নারী কণ্ঠে আর্তনাদ ও কান্নার শব্দ। কান্নার শব্দ শুনে এগিয়ে গিয়ে দেখি, আগুনে পোড়া শরীর নিয়ে কাতরাচ্ছেন একজন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী নারী। যে তার নাম রোকেয়া ছাড়া আর কিছুই বলতে পারছেন না।
হাসপাতালের রেজিস্ট্রার ও ভর্তি ফাইল থেকে জানা যায়, শনিবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে তার শরীরের প্রায় ৫০ শতাংশ পোড়া অবস্থায় কে বা কারা তাকে হাসপাতালের চতুর্থ তলায় ফেলে রেখে যায়। পরবর্তীতে হাসপাতালের নার্সদের সহযোগিতায় তাকে সেখানেই ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
যন্ত্রণায় কাতরানো এই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী নারীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি তার নাম রোকেয়া বলেন। পৌরসভার ওখানে আগুন লেগেছে ছাড়া আর কিছুই বলতে পারেননি। তবে তার ভাষায় রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জের টান লক্ষ্য করা গেছে।
হাসপাতালের দায়িত্বরত নার্স ফাহিমা আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, কে বা কারা তাকে এখানে ফেলে রেখে যায়। পরবর্তীতে আমরা তাকে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু করি। আমরা তার পোশাক পরিবর্তন থেকে শুরু করে টয়লেট পর্যন্ত করাচ্ছি। আমরা সবাই টাকা তুলে তার ওষুধ কিনে দিয়েছি। তবে সে তেমন কোনো কথা বলতে পারেন না। একটু পর পর ব্যথায় কান্নাকাটি ও চিৎকার করেন। এই আর্তনাদ ব্যথিত করে হাসপাতালের অন্য রোগীদেরও।
পাশের কক্ষে চিকিৎসাধীন এক রোগীর স্বজন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা দুদিন ধরে এই আর্তনাদ শুনছি। খুব মায়া লাগে কিন্তু সে কিছু বলতে পারে না। আমরা মাঝে মধ্যে এসে তাকে একটু পাউরুটি খাইয়ে দেই।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ডা. নুরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) এবং তত্ত্বাবধায়ক মো. সাইফুল ইসলামকে মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও সাড়া মেলেনি।
দ্য বার্ড সেফটি হাউসের চেয়ারম্যান ও সমাজকর্মী মামুন বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি আমি আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমি আগাীকালই খোঁজ নিয়ে তার সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থার পাশাপাশি তার পরিবারকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করবো।
এসপি