শিশু জুনায়েদ বাঁচতে চায়, পড়ালেখা করতে চায়

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙা ইউনিয়নের কাঁচিচর গ্রামের মাইদুল-জমিলা দম্পতির সন্তান জুনায়েদ (৯)। তৃতীয় শ্রেণিপড়ুয়া জুনায়েদ এখন আর হাসিখুশিতে নেই। গ্রামের অন্য শিশুরা বা বিদ্যালয়ের সহপাঠীদের সঙ্গে দুরন্তপনায় মেতে ওঠা বন্ধ হয়ে গেছে তার। কারণ, তার হার্টে ছিদ্র ধরা পড়েছে।
চিকিৎসক জানিয়েছেন, তার চিকিৎসা করতে অনেক টাকা লাগবে। তার দিনমজুর বাবার পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা অসম্ভব ব্যাপার। তাই সামর্থ্যবানদের কাছে আকুতি জানিয়েছেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জোনায়েদের বাবা মাইদুল ইসলাম দিনমজুর আর মা জমিলা বেগম গৃহিণী। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ের বয়স ৩ বছর। তাদের অভাব-অনটনের সংসার। শান্তশিষ্ট জুনায়েদ অন্য শিশুদের মতো বড় হচ্ছে। প্রায়ই বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে গিয়ে জুনায়েদ অসুস্থ হয়ে পড়ত। ছয় মাস আগে গ্রাম্য ডাক্তার আর কবিরাজি চিকিৎসা করে অনেক টাকা খরচ করেছেন তার বাবা। দুই মাস আগে আবারও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে জুনায়েদ।
পরে ঢাকার ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক ডা. মো. রাজিবুল বারী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানান, শিশু জুনায়েদের হার্টে ছিদ্র ধরা পড়েছে। চিকিৎসক পরামর্শ দিয়েছেন, তার অস্ত্রোপচার করা প্রয়োজন। এতে চিকিৎসা করতে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা লাগবে। দিনমজুর বাবার পক্ষে সামর্থ্য না থাকায় জুনায়েদের জীবন এখন শঙ্কায়।
মাইদুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলেটার মুখের দিকে তাকাতে পারি না। টাকার অভাবে আমার ছেলেকে হারাতে চাই না। চিকিৎসার জন্য এতগুলো টাকা আমি কোথায় পাব? আমি গরিব মানুষ। কেউ যদি একটু সহযোগিতা করত, তাহলে আমার ছেলেটাকে চিকিৎসা করাতে পারতাম।
তিনি বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শমতে চার মাসের মধ্যে অপারেশন করতে হবে। এ সময়ে ঢাকায় অপারেশন করতে না পারলে ভারতের মাদ্রাজ নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। দেশেই পারি না চিকিৎসা করাতে, বিদেশে কীভাবে নেব?
এই প্রতিবেদকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে জুনায়েদ কেঁদে বলে, আমি মরতে চাই না, আমি বাঁচতে চাই। পড়াশোনা করে বড় হতে চাই। বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে চাই।
মাইদুলের প্রতিবেশী জুলফিকার আলী বলেন, টাকার অভাবে জুনায়েদের চিকিৎসা করতে পারছেন না তার বাবা-মা। আমরা এলাকাবাসী হাটবাজার থেকে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা কালেকশন করে দিয়েছি। এই টাকায় তো তার চিকিৎসা হবে না।
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আব্দুল হক বলেন, মাঈদুল ইসলাম আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তার ৯ বছর বয়সী ছেলের হার্টে ছিদ্র ধরা পড়েছে। ডাক্তার পরামর্শ দিয়েছেন দ্রুত অপারেশন করতে। টাকার অভাবে তিনি ছেলের চিকিৎসা করাতে পারছেন না। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাকে সামান্য কিছু সহযোগিতা করেছি। সমাজের দানশীল ব্যক্তিরা এগিয়ে এলে হয়তো তার একটা ভালো চিকিৎসা হবে আশা করছি।
জুনায়েদেরর বাবা মাইদুলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে ০১৩০৭-৯৯৮৭৭৪ এই নম্বরে কথা বলা যাবে।
মো. জুয়েল রানা/এনএ