বিচ্ছিন্ন হাত জোড়া লাগিয়ে চমক দেখালেন খুলনার চিকিৎসকরা

খুলনায় দুর্ঘটনায় কবজি থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হওয়া হাত জোড়া লাগিয়ে চমক দেখালেন চিকিৎসকরা। গত ৬ ফেব্রুয়ারি খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দীর্ঘ ৮ ঘণ্টার অস্ত্রোপচার শেষে এক ভারতীয় নাগরিকের বিচ্ছিন্ন হাত প্রতিস্থাপন করে সফলতা পেয়েছেন তারা। এখন কেটে যাওয়া হাতের আঙুল নড়াচড়া করতে পারছেন তিনি। ডা. এ ওয়াই এম শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে ৯ সদস্যের সার্জন টিম এ অস্ত্রোপচার করেন।
চিকিৎসকরা বলছেন, খুলনায় এ ধরনের সফলতা এই প্রথম। অপারেশনে সফলতা পেয়ে খুশি তারা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বাগেরহাটের রামপালে নির্মানাধীন তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ক্রেন অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন ভারতীয় নাগরিক মুন্না মাহোত। অন্যান্য দিনের মতো গত ৬ ফেব্রুয়ারি সকালে কাজে যোগ দেন তিনি। দুপুর ১২টার দিকে ক্রেনে মাল পরিবহনের সময় ক্রেনের গ্লাস ডোর ভেঙে তার বাম হাতের কবজি বরাবর পড়ে। এতে শরীর থেকে তার হাতটি সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। হাতের দিকে তাকিয়ে দেখেন ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। চোখের সামনে পড়ে আছে বিচ্ছিন্ন হাত। এর পরপরই তার সহকর্মীরা স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে বিচ্ছিন্ন হাতটি একটি পলিব্যাগে বরফ দিয়ে ডুবিয়ে এক ঘণ্টা পর খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
এখানে আসার পরপরই অস্ত্রোপচার শুরু করেন ৯ সদস্যের চিকিৎসক টিম। দুপুর ২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দীর্ঘ ৮ ঘণ্টা অস্ত্রোপচার শেষে সফল হন চিকিৎসকরা। এমন চিকিৎসায় মুন্না মাহোতের সহকর্মীরাও স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। এছাড়া হাত জোড়া লাগবে এমনটা ভাবেননি আহত মুন্না মহোতও।
ভারতীয় নাগরিক মুন্না মাহোত বলেন, অপারেশন সফল হয়েছে। চিকিৎসা ঠিকঠাক চলছে। সব ঠিক আছে। হাত কাজ করছে, ভালো লাগছে। চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিফ কার্ডিয়াক সার্জন ও সহযোগী অধ্যাপক এ ওয়াই এম শহীদুল্লাহ বলেন, এ ধরনের চিকিৎসায় টিম ওয়ার্কের প্রয়োজন হয়। সেই কাজটাই আমরা করেছি। দ্রুত তাকে ছেড়ে দিতে পারব বলে আশা করছি। তিনি ওই হাত দিয়ে শতভাগ না হলেও ৯০ শতাংশ কাজ করতে পারবেন বলে আমরা আশাবাদী।
মোহাম্মদ মিলন/আরএআর