খুলনায় কলেজছাত্র হত্যায় মা-ছেলের যাবজ্জীবন

খুলানার ডুমুরিয়ায় কলেজ ছাত্র সুদর্শন রায় (২৫) হত্যা মামলায় মা-ছেলের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ মামলার অপর এক আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে খুলনার অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. ইয়ারব হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ছিলেন এম ইলিয়াস হোসেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন ডুমুরিয়ার বিপুল বিশ্বাসের স্ত্রী দ্রৌপদী বিশ্বাস (৪৫) ও তার ছেলে কংকন বিশ্বাস। এ মামলায় বিপুল বিশ্বাসকে খালাস দেওয়া হয়।
রায়ে দ্রৌপদী বিশ্বাস (৪৫) ও তার ছেলে কংকন বিশ্বাসের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আদালতের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। তবে ফাঁসির প্রত্যাশা করেছিলাম।
দীনবন্ধু মন্ডল, সুদর্শন রায়ের মামা
আদালত সূত্রে জানা যায়, তাদের মধ্যে দ্রৌপদী বিশ্বাসকে পেনাল কোডের ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০১ ধারায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৩ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এ ছাড়া অপর আসামি কংকন বিশ্বাসকে পেনাল কোডের ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। আর বিপুল বিশ্বাসকে মামলার দায় থেকে খালাস দেওয়া হয়। মামলার রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ছিলেন এম ইলিয়াস হোসেন। আর আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন সন্দীপ কুমার দাশ।
মামলার বাদী দীনবন্ধু মন্ডল এজাহারে উল্লেখ করেন, বটিয়াঘাটার সুকুমার রায়ের ছেলে সুদর্শন রায় (২৫) ছোট থেকেই তার মামা দীনবন্ধু মন্ডলের বাড়ি ডুমুরিয়ার বড়ডাঙ্গা এলাকায় বসবাস করতেন। ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার কথা বলে সুদর্শন রায় বাড়ি থেকে বের হন রাত সাড়ে ১১টার দিকে। ২০ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে ডুমুরিয়া মির্জাপুর তিন রাস্তার মোড়ে কালভাটের অদূরে স্থানীয় তুহিন বিশ্বাসের সঙ্গে সুদর্শনের কথাবার্তা হয়। এরপর তিনি একা একা মির্জাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দিকে রওনা হন। সেখানে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আসামিরা সুদর্শনকে তাদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যান এবং পরস্পর যোগসাজশে তাকে হত্যা করে।
এজাহারে আরও উল্লেখ করেন, আসামিরা আমার ভাগনে সুদর্শনকে হত্যার পর লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে নৌকাযোগে ডুমুরিয়ার মির্জাপুর গ্রামের দক্ষিণ খালের উত্তর পার্শ্বে জনৈক অরুণ কুমার মহলদারের পুকুর পাড়ের বেড়িবাঁধের ওপর ফেলে রাখে। ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৬টার দিকে স্থানীয় লোকজন মৃতদেহ দেখে আমাকে সংবাদ দেয়। সংবাদ শুনে আমিসহ আমার বাড়ির লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে ভাগনের মৃতদেহ শনাক্ত করি।
এ সময় তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন দেখতে পাই। পুলিশকে সংবাদ দিলে ভাগনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহত সুদর্শন রায়ের মামা দীনবন্ধু মন্ডল বাদী হয়ে ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ডুমুরিয়া থানায় মামলা করেন।
দীনবন্ধু মন্ডল ঢাকা পোস্টকে বলেন, রায়ে দ্রৌপদী বিশ্বাস (৪৫) ও তার ছেলে কংকন বিশ্বাসের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আদালতের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। তবে ফাঁসির প্রত্যাশা করেছিলাম।
মোহাম্মদ মিলন/এনএ