রিং সাইনের শেয়ার নিয়ে কাড়াকাড়ি

কারখানার ৭০ শতাংশ উৎপাদন বন্ধ থাকা রিং শাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের শেয়ার নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। ফলে বৃহস্পতিবার শেয়ারটির দাম ৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেড়ে লেনদেন হয়েছে ১১ টাকা ৩০ পয়সায়। শুধু আজই নয় গত কয়েক দিন ধরেই শেয়ারটির দাম বাড়ছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোম্পানিটির মালিকানা বদলের খবরে শেয়ার কিনতে বিনিয়োগকারীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয় রিং শাইনের মালিকানায় আসছে ইউনিয়ন গ্রুপ। এমন খবরে ভালো মুনাফার প্রত্যাশায় শেয়ারটি কেনার আগ্রহ বাড়ে বিনিয়োগকারীদের।
ডিএসইর তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার লেনদেনের শুরুতে শেয়ারটির দাম ছিল ১০ টাকা ৪০ পয়সা। ৯০ পয়সা বেড়ে দিনের সর্বশেষে লেনদেন হয়েছে ১১ টাকা ৩০ পয়সায়। শেয়ারটির দাম গত ২২ মে থেকে বাড়তে শুরু করেছে, ওই দিন ৮ টাকা ৫০ পয়সা লেনদেন হয়। এরপর ৩ টাকা ৮০ পয়সা বেড়ে আজ লেনদেন হয়েছে ১১ টাকা ৩৯০ পয়সায়।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে খরব প্রকাশিত হয়, বস্ত্র খাতের কোম্পানি রিং শাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের শেয়ার কিনে মালিকানায় আসছে ইউনিয়ন গ্রুপ। এই গ্রুপটির রিং শাইনের মতোই একই ধরনের টেক্সটাইল কোম্পানিসহ কয়েকটি কোম্পানি রয়েছে।
রিং শাইন কোম্পানির শেয়ার কিনে মালিকানায় আসার লক্ষ্যে গত ১২ এপ্রিল পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) প্রস্তাব জমা দেয় ইউনিয়ন গ্রুপ। প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করে সম্মতি দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
বর্তমানে কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা ৫০ কোটি ৩ লাখ ১৩ হাজার ৪৩টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে রয়েছে ৩১ দশমিক ৫৪ শতাংশ শেয়ার। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ১৬ দশমিক ২৩ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে দশমিক ৫ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৫২ দশমিক ১৮ শতাংশ শেয়ার। কোম্পানিটির মালিকানায় আসতে ৩১ শতাংশ শেয়ার কিনতে হবে ইউনিয়ন গ্রুপকে।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাকিবুল কবির বলেন, আমরা কারখানাটি পরিদর্শন করেছি। এখানে ম্যানেজমেন্ট ক্রাইসিস রয়েছে। আমাদের গ্রুপের একই ধরনের কারখানা রয়েছে। ফলে এই কারখানা পরিচালনা করতে আমাদের কী করতে হবে তার পরিকল্পনা তৈরি করেছি, নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে দিয়েছি।
এ বিষয়ে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, নানা জটিলতায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পর থেকেই কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর কোম্পানির পর্ষদ পরিবর্তন করেছি। এখন উৎপাদনও শুরু করেছে। ভালোভাবে উৎপাদনে ফিরতে কোম্পানিটি অধিগ্রহণ করতে চাচ্ছে ইউনিয়ন গ্রুপ। আমরা সম্মতি দিয়েছি।
কোম্পানির তথ্য মতে, প্রাথমিক গণ-প্রস্তাবের (আইডিও) মাধ্যমে ১৫০ কোটি টাকা উত্তোলন করে রিং শাইন। সাভারের ইপিজেডে অবস্থিত এই কোম্পানিটি এই টাকায় ঋণ পরিশোধ এবং মেশিনারিজ কেনার জন্য এই টাকা সংগ্রহ করে। তালিকাভুক্তির প্রথম বছর কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিয়েছিল। এরপর ২০২০ সাল থেকে উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। মালিকরা দেশ ছেড়ে চলে যান। বর্তমানে ৩০ শতাংশ উৎপাদন চালু রেখেছে বিএসইসির নতুন গঠিত পরিচালনা পর্ষদ।
এমআই/এসকেডি