বছরে ২০০ স্টার্টআপ সিএমএসএমই খাতে যুক্ত হয়

প্রতিবছর বাংলাদেশে প্রায় ২০০ স্টার্টআপ কটেজ, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের উদ্যোক্তা (সিএমএসএমই) হিসাবে যুক্ত হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে স্টার্টআপের সংখ্যা প্রায় ১২০০। ২০২১ সাল পর্যন্ত এ খাতে ৪১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ হয়। এর মধ্যে ৪১২ মিলিয়নই বিদেশি বিনিয়োগ। যার মাধ্যমে দেশে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়।
শনিবার (২৯ অক্টোবর) ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘সিএমএসএমই স্টার্টআপদের সফলতার পথে প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার বক্তারা এসব তথ্য উপস্থাপন করেন।
সেমিনারে তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আলম যথাক্রমে প্রধান অতিথি ও বিশেষ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। যেখানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান।
রিজওয়ান রাহমান বলেন, সিএমএসএমইরাই আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি, দেশের জিডিপিতে এ খাতের অবদান ৩০ শতাংশ। মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ এ খাতের সঙ্গে জড়িত। বর্তমানে আমাদের স্টার্টআপের সংখ্যা প্রায় ১২০০ ও প্রতিবছর প্রায় ২০০ স্টার্টআপ এ খাতের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। তথ্য-প্রযুক্তির বর্তমান সময়ে এ খাতের প্রচুর সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও দক্ষ মানব সম্পদ ও আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাব, দুর্বল সাপ্লাইচেইন অবকাঠামো, ইনোভেটিভ চিন্তা-চেতনা এবং আর্থিক সহায়তার অনিশ্চয়তার কারণে আমারা এ খাতে থেকে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য প্রাপ্তিতে বঞ্চিত হচ্ছি।
তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব জিয়াউল আলম বলেন, ১৭টি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানকে সরকারের ‘স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড’-এর পক্ষ থেকে প্রণোদনা সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এটুআই (ইন্সপায়ার টু ইনোভেশন) প্রকল্পের ‘চ্যালেঞ্জ ফান্ড’-এর মাধ্যমে যেসব স্টার্টআপ উদ্যোক্তা কার্যক্রম পরিচালনায় নানাবিধ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন। তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। সরকার প্রতিটি জেলায় ‘শেখ কামাল আইটি অ্যান্ড ইনোভেশন সেন্টার’ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণে করেছে, যার মাধ্যমে স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে পাঠাও এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম আহমেদ বলেন, ২০২১ সালে বাংলাদেশে স্টার্টআপ খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৪১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যেখানে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪১২ মিলিয়ন। এর ফলে দেশে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এ খাতের উদ্যোক্তারা প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা ও রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্কের অনুপস্থিতি, আর্থিক সহায়তার ঘাটতি, দক্ষ মানবসম্পদ এবং আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়ে থাকেন। স্টার্টআপ খাতের উদ্যোক্তাদের বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে ‘স্টার্টআপ পলিসি’ প্রণয়ন শিক্ষা ও শিল্পখাতের সমন্বয় বৃদ্ধি, সরকারি সেবা ও সহযোগিতা প্রাপ্তি আরও দ্রুত করা জরুরি।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আলম বলেন, নতুন শিল্পনীতিতে সিএমএসএমই খাতের সংজ্ঞায়ন সুনির্দিষ্টকরণ করা হয়েছে, যেটি এ খাতের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ইতোমধ্যে ‘এসএমই বোর্ড’ গঠন করেছে। যদিও এখাতের উদ্যোক্তাদের সেখানে প্রতিনিধিত্ব তেমন আশানুরূপ নয়।
সেমিনারে চালডাল-এর ফাইন্যান্স ডিরেক্টর তানভীর রশিদ, ফুডপান্ডা বাংলাদেশ লিমিটেডের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দা আমব্রিন রেজা এবং বাংলাদেশ এঞ্জেলসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নির্ঝর রহমান সেমিনারের নির্ধারিত আলোচনায় অংশগ্রহণ নেন।
আরএম/এসকেডি