২য় বৈঠকেও সুরাহা হয়নি : দাম বাড়ছে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য পণ্যের

প্রক্রিয়াজাত খাদ্য পণ্যে বাড়তি মূসক ও শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে দ্বিতীয় দফায় সুরাহা হয়নি। ফলে শিগগিরই এসব পণ্যের দাম বাড়ানোর কথা ভাবছে ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের সঙ্গে বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) নেতারা সাক্ষাৎ শেষে এসব কথা বলেন।
এর আগে একই দাবিতে অনুষ্ঠিত প্রথম বৈঠকে বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্ক কমানোর আশ্বাস পাওয়ার দাবি করেছিলেন ব্যবসায়ীরা। গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় ওই বৈঠক।
আরও পড়ুন
আজকের বৈঠকে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান, এনবিআর সদস্য ড. মো. আবদুরে রউফ (মূসক নীতি), দ্বিতীয় সচিব (মূসক) মো. বদরুজ্জামান মুন্সী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে প্রাণ আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী আহসান খান চৌধুরী বলেন, আমার মনে হয় রেগুলেটরদের ভালো করে বোঝাতে সক্ষম হচ্ছি না। আমরা চেষ্টা করছি সাধ্যমতো ফুড আইটেমের ওপর অবশ্যই ভ্যাট ও সাপ্লিম্যান্টারি ডিউটি বাড়ানো যৌক্তিক নয়। এনবিআর চেয়ারম্যানকে বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করেছি। আমরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েও পুরানো দামে পণ্য সামগ্রী রেখেছি। যদিও ভ্যাটের বোঝা বেড়েছে। বেশি রেটে ভ্যাট প্রদান করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করছি না যে বৈঠকটা ফলপ্রসূ হয়নি। উনারা (এনবিআর) আমাদের কাছে থেকে সময় নিচ্ছেন। বাজেটের কথা বলছেন। আমরা কাজ করে যাব, হয়ত আমাদের আরও বেশি সহ্যশীল হতে হবে। সহনীয় ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। অবশ্যই মনে দুঃখ লাগে। যখন পণ্যের দাম ভোক্তার জন্য বাড়াতে হয়,খারাপ তো লাগেই।
ব্যবসায়ীরা এনবিআর, অর্থমন্ত্রণালয়কে বার বার বোঝানোর চেষ্টা করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, যদি ট্যাক্স বাড়িয়ে দেওয়া হয় তাহলে প্রসেসড পণ্যের চাহিদাও কমে যাবে। আমরা স্বল্পমূল্যে ভোক্তার কাছে উপস্থাপন করতে চাই।
দাবি না মানলে ব্যবসায়ীরা কী করবে জানতে চাইলে আহসান খান বলেন, কর্মসূচি, আন্দোলন করা আমাদের সাজে না। বার বার আমাদের কষ্টের কথা মানুষের সামনে উপস্থাপন করবো। ব্যবসায় যদি মুনাফা থাকে তাহলে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবো। মুনাফা যদি কম হয়; বাংলাদেশে অন্য ব্যবসা আছে। আমরা অন্য ব্যবসার দিকে ধাবিত হব।’
অন্যদিকে বাপার সভাপতি এম এ হাশেম বলেন, ফিনিশড প্রোডাক্টের ওপর যখন ট্যাক্স বাড়বে। অটোমেটিকলি দাম বাড়বে। দাম বাড়লে ভোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমাদের বিক্রি কমে যায়, আমরা ট্যাক্স কম দিতে বাধ্য হই। শ্রমিক ছাঁটাই করতে বাধ্য হই। পুরো অর্থনীতির ওপর প্রভাব পড়ে। পুরো জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটা চেয়ারম্যানকে বুঝিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, কয়েকদিনের মধ্যে যদি এর সমাধান না হয়, তাহলে আমরা আমাদের পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য হব। আর কতদিন লস দিব।
বাংলাদেশ বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভুঁইয়া বলেন, আমরা এনবিআরকে বার বার বিরক্ত করার চেষ্টা করছি। চেয়ারম্যানকে বললাম কিন্তু কার্যকারিতা বাস্তবে দেখতে না পেরে আমরা আপনাকে আবার বিরক্ত করার জন্য এসেছি।
তিনি বলেন, বিস্কুটের প্যাকেটে আর কত ছোট করবো। আমরা অন্য অ্যাকশনে যেতে পারি। মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতে চাই না। বিস্কুট যত ছোট আছে, আর ছোট করতে চাইনা। প্রাইজ অ্যাডজাস্ট না হলে, বাধ্য হয়ে এটা করতে হয়। আমরা চাই ভোক্তার যা প্রাপ্য সেটাই যেন সে পায়, যোগ করেন তিনি।
ভ্যাটের জাল বাড়াতে বাপা সদস্যদের সচেতন করবে জানিয়ে এই ব্যবসায়ী বলেন, যারা ভ্যাট দিচ্ছে তাদের ওপর বেশি চাপাচাপি। যারা ভ্যাট দিচ্ছে না তাদের এনবিআর যায় না। চেয়ারম্যানকে কথা দিয়েছি অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে তাদের নেটে ঢুকাবো। এর জন্য ইআরপির ব্যবস্থা করবো। তাহলে নেট বাড়বে।
আরএম/এআইএস