বিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম ক্রমান্বয়ে বাড়ছে : পাকিস্তান হাইকমিশনার

বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দীকি বলেছেন, ‘ব্যবসা-বাণিজ্যের বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান বেশ আশাব্যঞ্জক। ফলে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে দেশটির সুনাম ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। পাকিস্তানও বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে অত্যন্ত আগ্রহী।’
বুধবার (১৩ জানুয়ারি) ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমানের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দীকি সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি এসব কথা বলেন।
সাক্ষাতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের আগ্রহের কথাও উঠে আসে।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান বলেন, ‘পাকিস্তানের সর্বোচ্চ সংখ্যক উদ্যোক্তা ঢাকা চেম্বার আয়োজিত ‘ডিসিসিআই বিজনেস কনক্লেভ ২০২১’-এর বিটুবি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন এবং বাংলাদেশে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালু করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।’
তিনি সার্কভুক্ত আঞ্চলিক বাণিজ্য বাড়াতে উভয় দেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের আরও উদ্যোগী হয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘সম্প্রতি পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা প্রাপ্তিতে বিদ্যমান সকল বিধিনিষেধ তুলে দিয়েছে, যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক একটি বিষয়। ফলে দুদেশের উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম সম্প্রসারিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘ডিসিসিআই বিজনেস ইন্সটিটিউট (ডিবিআই) স্থানীয় বাজার ও উদ্যোক্তাদের জন্য প্রশিক্ষণ কোর্সে পাকিস্তানের তরুণ উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ আহ্বান করেছে। যেখানে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক পরিবেশ ও প্রয়োজনীয় নিয়মাবলী সম্পর্কে জানতে পারবেন। কৃষি এবং সমুদ্র অর্থনীতি এ দুই খাতে দুদেশের একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।’
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি উল্লেখ করেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ৫৪৩.৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং দুদেশের মধ্যকার ব্যবসা-বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা নিরসন এবং দুদেশের বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসার ওপর জোর দেন।
পাকিস্তান হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দীকি বলেন, ‘দুদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণে একটি ‘যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন’ স্থাপন করা হয়েছিল। যেটির সর্বশেষ সভা ২০০৫ সালে অনুষ্ঠিত হয়।’
তিনি বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের কার্যক্রম পুনরায় সক্রিয়ভাবে চালুর প্রস্তাব করেন। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে দুদেশের মধ্যকার সরাসরি বিমান যোগাযোগ স্থাপন এবং করাচি ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের মধ্যে সরাসরি পণ্য পরিবহন কার্যক্রম দ্রুততম সময়ের মধ্যে চালু করতে আহ্বান জানান পাকিস্তানের হাইকমিশনার।
পাকিস্তানের ফ্যাশন শিল্প বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দুদেশের সম্পর্কোন্নয়ন ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণে সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বৃদ্ধি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে কাজ করতে পারে।’
সাক্ষাৎকালে ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন এবং পাকিস্তান দূতাবাসের কমার্সিয়াল সেক্রেটারি মোহাম্মদ সুলেমান খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এসআই/এফআর