দ. এশিয়ায় বেসরকারি শিক্ষা খাতে সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল বাংলাদেশ

Dhaka Post Desk

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৩ জানুয়ারি ২০২৩, ০৬:১৪ পিএম


দ. এশিয়ায় বেসরকারি শিক্ষা খাতে সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল বাংলাদেশ

সংগৃহীত

দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বেসরকারি শিক্ষা খাতে সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল বাংলাদেশ। এর মধ্যে মাধ্যমিক শিক্ষার ৯৪ শতাংশ এবং প্রাক প্রাথমিক শিক্ষার ৫৫ শতাংশ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নির্ভরশীল।

দক্ষিণ এশিয়ায় অবস্থিত দেশগুলোর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের তুলনামূলক পরিসংখ্যানে এমন চিত্র উঠে এসেছে।

মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ইউনেস্কোর গ্লোবাল এডুকেশন মনিটরিং রিপোর্ট ২০২২’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর শিক্ষা ব্যবস্থার পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়। এতে সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে ব্র্যাক। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাক প্রাথমিক শিক্ষায় সর্বোচ্চ বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শ্রীলঙ্কায় ৮০ শতাংশ, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাংলাদেশে ৫৫ শতাংশ। প্রাথমিকে সর্বোচ্চ ভারতে ৪৫ শতাংশ আর বাংলাদেশে ২৪ শতাংশ। মাধ্যমিকে বাংলাদেশের বেসরকারি বিদ্যালয়ে সর্বাধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী ৯৪ শতাংশ, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভারতে ৫১ শতাংশ এবং উচ্চ শিক্ষায় সর্বোচ্চ ভারতে ৫৭ শতাংশ আর বাংলাদেশে এই হার ৩৬ শতাংশ। গড়ে সবচেয়ে বেশি বেসরকারি খাতে নির্ভরতা বাংলাদেশের।

প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, দক্ষিণ এশিয়ায় শিক্ষায় প্রবেশের ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি হলেও রাষ্ট্রের শিক্ষায় বিনিয়োগ অপ্রতুল। একমাত্র ভুটান ব্যতীত অন্যান্য দেশ কখনোই শিক্ষাক্ষেত্রে মোট সরকারি ব্যয়ের ১৫ শতাংশ বা মোট দেশীয় উৎপাদনের (জিডিপি) ৪ শতাংশের কাছাকাছিও ব্যয় করেনি। ২০১০ এর দশকে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা শিক্ষাখাতে মোট জিডিপির ২.৫ শতাংশেরও কম ব্যয় করেছে। এমন অবস্থায় গুণগতমান এবং শিক্ষার প্রাসঙ্গিকতা উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় পাকিস্তানের অবস্থা আরও খারাপ। দেশটির এ্যানুয়াল স্টেটাস অব এডুকেশন রিপোর্ট (এএসইআর) অনুযায়ী, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়া শেষে অর্ধেকেরও কম শিক্ষার্থী উর্দুতে একটি গল্প পড়তে পারে, ইংরেজিতে একটি বাক্য পড়তে পারে বা একটি সাধারণ ভাগের সমস্যা সমাধান করতে পারে।

প্রাথমিক আর মাধ্যমিক দুই মন্ত্রণালয়ে, বাধাগ্রস্ত শিক্ষার সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি

বাংলাদেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার দায়িত্বভার দুটি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ভাগ করা হয়েছে। যা পাঠ্যক্রম, শিক্ষক, শিক্ষার গুণগত মান ও অন্যান্য মানদণ্ডগুলোর ক্ষেত্রে সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গিকে বাধাগ্রস্ত করছে।

বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষার বিষয়গুলো দেখে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আর মাধ্যমিক শিক্ষার দায়িত্ব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হাতে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ধর্ম বিশ্বাস ভিত্তিক স্কুলগুলোর ব্যবস্থাপনা অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পৃথক কর্তৃপক্ষকে অর্পণ করা হয়, যা শিশু সুরক্ষা এবং পাঠ্যক্রমের মতো বিষয়গুলোতে চ্যালেঞ্জের জন্ম দেয়। যেমন- শ্রীলঙ্কার আন্তর্জাতিক স্কুল ব্যবস্থা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন নয়।

এবারের গ্লোবাল এডুকেশন মনিটরিং রিপোর্টে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পরিবার ঋণ করে বেসরকারি পলিটেকনিকে পড়াশোনার খরচ মেটায়। ভুটান, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহণকারীদেরকে স্বল্প সুদে ঋণের জন্য সরকারি শিক্ষার্থী ঋণ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। তবে বাংলাদেশ বেসরকারি পরিষেবা প্রদানকারীরা ফির উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। 

দক্ষিণ এশিয়ার দেশ বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, মালদ্বীপ, ইরান, পাকিস্তান, ভুটান, এবং শ্রীলঙ্কার ওপর ভিত্তি করে এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

এমএম/এমজে

Link copied