ইউজিসির চিঠি পেয়ে বিএনপি-জামায়াতের ‘ষড়যন্ত্র’ বলছে আইআইইউসি

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে পাঠানো একটি চিঠির 'ব্যাখ্যা দিয়েছে' আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি)। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে চিঠি পাঠানোর বিষয়টি বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্র বলে দাবি করা হয়।
এর আগে গত ৮ ডিসেম্বর আইআইইউসির রেজিস্ট্রার বরাবর একটি চিঠি পাঠান ইউজিসির পরিচালক মো. ওমর ফারুক। এতে নদভী ও তার স্ত্রী রিজিয়া সুলতানার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। মূলত দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদকে) জমা হওয়া একটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থাটি থেকে পাঠানো একটি পত্রের সূত্র ধরে আইআইইউসির কাছে ব্যাখ্যা চায় ইউজিসি।
ব্যাখ্যায় আইআইইউসি কর্তৃপক্ষ উল্লেখ করে, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী প্রফেসর ড. আবু রেজা নদভীকে মনোনয়ন দেওয়ায় ঈর্ষান্বিত বিএনপি-জামায়াতের একটি চক্র ইউজিসি, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন স্থানে বেনামি চিঠি দিয়ে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি তৈরির অপপ্রচার চালাচ্ছে। আইআইইউসির দায়িত্বে থাকাকালীন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবের আমির আ ন ম শামসুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকার অর্থ আত্মসাৎ হওয়ার লিখিত অভিযোগ আইআইইউসি কর্তৃপক্ষ দুদকে জমা দিয়েছে প্রায় এক বছর আগে।’
আরও পড়ুন
‘এই অভিযোগের প্রমাণ হিসেবে প্রায় হাজার পৃষ্ঠার নথি দুদকে প্রদান করা হয়। কিন্তু এক বছর পরও এই অভিযোগ এখনো দুদক পুরোপুরি আমলে নেয়নি। অথচ সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে বেনামি উড়ো চিঠি দুদক থেকে ইউজিসিতে আসা মাত্রই আইআইইউসিতে পাঠানো হয়েছে।’
বিবৃতিতে আইআইইউসি কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ২০২১ সালের মার্চ মাসে সরকার প্রফেসর ড. আবু রেজা নদভীকে আইআইইউসি বোর্ড অব ট্রাস্টের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেয়। এরপরই আইআইইউসিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়, অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা হয়। সরকারের নিয়োগকৃত অডিট ফার্ম দ্বারা আইআইইউসির আয়-ব্যয় অডিট হয়। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থীর নামে মিথ্যাচার করে ইউজিসিতে বেনামি চিঠি পাঠানো একমাত্র বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসরদেরই কাজ হতে পারে।’
‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০- মেনেই আইআইইউসি প্রশাসন সুষ্ঠুভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করছে। ইউজিসি তাদের চিঠিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০- এর যে ধারা উল্লেখ করেছে, আইআইইউসি কর্তৃপক্ষ সে আইন কিছুতেই লঙ্ঘন করেনি। অচিরেই আইআইইউসি প্রশাসনের কাছে ইউসিজির চাওয়া ব্যাখ্যা সঠিকভাবেই দেওয়া হবে।’
জানা গেছে, দুদকে জমা হওয়া অভিযোগে আইআইইউসির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান নেজামুদ্দিন নদভী ও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য রিজিয়া সুলতানা চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রতি মাসে সম্মানী বাবদ ৭ লাখ করে মোট ১৪ লাখ, গাড়ির তেল বাবদ ২ লাখ, চালকের বেতন ৭০ হাজার এবং ব্যক্তিগত সহকারীর বেতন নেওয়াসহ আরও কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা হয়।
দুদকে জমা হওয়া চিঠির বিষয়ে ইউজিসি আইআইইউসিতে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ধারা ৪৪ (৭) মোতাবেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ তহবিলের অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় ব্যয় ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যয় করা যাবে না। আইন অনুযায়ী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং সদস্যদের আর্থিক সুবিধা গ্রহণের কোনো সুযোগ নেই।
এমআর/এসকেডি