সোমবার থেকে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন সরকারি প্রাথমিকের শিক্ষকরা

সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সোমবার (২৬ মে) থেকে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা। এতে করে বিদ্যালয়গুলোর পাঠদান কার্যক্রম কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
মূলত, সহকারী শিক্ষক পদকে এন্ট্রি পদ ধরে ১১ গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, চাকরির ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার জটিলতা নিরসন এবং প্রধান শিক্ষকের শতভাগ পদে সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতিসহ দ্রুত পদোন্নতি দেওয়ার দাবিতে তারা এই কর্মসূচি দিয়েছেন। সারাদেশের প্রায় সাড়ে তিন লাখ শিক্ষক পূর্ণ বিরতির এই কর্মসূচি পালন করবেন।
‘সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’ এর ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচি নিয়ে শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষার মূল ভিত্তি গঠনের দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে ‘পদমর্যাদা ও বেতন কাঠামোয় বঞ্চনার’ অবসান না হলে আন্দোলন আরও জোরদার হবে।
এর আগে ধাপে ধাপে কর্মবিরতি পালন করেছিলেন শিক্ষকরা। গত ৫ মে থেকে ১৫ মে পর্যন্ত ১ ঘণ্টা, ১৬ মে থেকে ২০ মে পর্যন্ত ২ ঘণ্টা এবং ২১ মে থেকে ২৫ মে পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করে, শেষপর্যায়ে আজ থেকে তারা পূর্ণ দিবস কর্মবিরতিতে গেছেন।
আরও পড়ুন
আন্দোলনকারীদের অন্যতম মুখপাত্র, ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক এবং বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, কনসালটেশন কমিটির সুপারিশ জমা দেওয়ার চার মাস পেরিয়ে গেলেও সরকার কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। নয় মাস অপেক্ষা করার পরও শিক্ষকদের ন্যায্য দাবিগুলো উপেক্ষিত থাকায় আমরা বাধ্য হয়েই পূর্ণ দিবস কর্মবিরতির পথ বেছে নিয়েছি।
কি আছে শিক্ষকদের দাবিতে?
শিক্ষকদের তিন দফা মূল দাবির মধ্যে রয়েছে :
১. কনসালটেশন কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী যৌক্তিক সংস্কার করে সহকারী শিক্ষক পদকে ‘এন্ট্রি পদ’ হিসেবে ১১তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ।
২. ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা দূর করা।
৩. প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতিসহ দ্রুত পদোন্নতি নিশ্চিত করা।
এছাড়াও রয়েছে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সপ্তাহে শুক্রবার ও শনিবার বিদ্যালয় বন্ধ রাখার এবং প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য সীমিত রাখার।
বিপাকে পড়বেন শিক্ষার্থীরা
এই পূর্ণ দিবস কর্মবিরতির ফলে দেশের প্রায় ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি ও সিলেবাস কাভারেজে বড় ধরনের ধাক্কা লাগবে বলে আশঙ্কা করছেন অভিভাবকরা। তবে শিক্ষকদের আন্দোলন দীর্ঘায়িত হলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ নিয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
আরএইচটি/এআইএস