ইচ্ছামতো তদন্ত রিপোর্ট নয়, ফরম্যাট বাধ্যতামূলক করল মাউশি

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) অধীন তদন্ত কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও নিয়মতান্ত্রিকতা আনতে এবার থেকে নির্ধারিত ফরম্যাটে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এতদিন পর্যন্ত তদন্ত কর্মকর্তারা নিজেদের মতো করে প্রতিবেদন তৈরি করতেন, যার ফলে একাধিক অভিযোগের তদন্তে কাঠামোগত বৈচিত্র্য থাকত এবং সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিভ্রান্তি তৈরি হতো। এসব কারণেই এখন থেকে তদন্ত কার্যক্রমের মানোন্নয়নে ফরম্যাট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
সম্প্রতি মাউশির এইচআরএম ইউনিটের পরিচালক প্রফেসর বি. এম. আব্দুল হান্নানের সই করা এক অফিস আদেশে এমন সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, অধিদপ্তর ও এর অধীনস্থ দপ্তরসমূহে পরিচালিত তদন্তের ক্ষেত্রে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এখন থেকে মাউশি নির্ধারিত ফরম্যাট অনুসরণ করতে হবে। এ নির্দেশনা তদন্ত সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।
একইসঙ্গে নির্ধারিত ফরম্যাটে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরির জন্য কাঠামোও নির্ধারণ করা হয়েছে। তাতে প্রতিবেদন শুরুতেই তদন্তের বিষয়, সূত্র, তদন্তের সময়-স্থান, তদন্ত কর্মকর্তার নাম ও পদবিসহ পরিচয় লিখতে হবে। এরপর অভিযোগের প্রেক্ষাপট, তদন্ত পদ্ধতি (সরেজমিন/মাউশি অফিসে), তদন্তকালে উপস্থিত ব্যক্তিদের তালিকা এবং অভিযোগগুলো পর্যায়ক্রমে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।
এছাড়া প্রতিটি অভিযোগের জন্য আলাদা করে অভিযোগকারীর বক্তব্য, অভিযুক্তের বক্তব্য, সাক্ষীদের বক্তব্য, সংশ্লিষ্ট নথিপত্র ও প্রমাণাদি তুলে ধরতে হবে। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে ‘পর্যালোচনা’ অংশে বিষয়টি বিধিসম্মতভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে এবং সর্বশেষ অংশে অভিযোগ প্রমাণিত কি না—সেই বিষয়ে মতামত দিতে হবে। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, কোনো ধরনের শাস্তির সুপারিশ প্রতিবেদনে দেওয়া যাবে না।
তদন্ত ফরম্যাটের সঙ্গে যুক্ত নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, তদন্তের পূর্বে অভিযুক্তকে অভিযোগপত্র সরবরাহ করতে হবে এবং তদন্তকালে সংশ্লিষ্টদের লিখিত বক্তব্য নিয়ে তাতে স্বাক্ষর রাখতে হবে। প্রতিবেদন দুই পৃষ্ঠার দুই পাশেই লিখতে বা প্রিন্ট করতে হবে এবং এর সঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তার নিয়োগপত্র, অভিযোগপত্র, নোটিশ অনুলিপি, সাক্ষীদের লিখিত বক্তব্য, উপস্থিতির স্বাক্ষরপত্র, প্রমাণপত্রসহ সব তথ্য সংযুক্ত করতে হবে।
এছাড়া তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুতের সময় পৃষ্ঠা নম্বর স্পষ্টভাবে লিখে দিতে হবে এবং তদন্তে বিলম্ব হলে তার কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে। বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, এই তদন্ত প্রতিবেদন কোনো পক্ষকে সরবরাহ করা যাবে না, এটি তদন্তকারী কর্মকর্তা ও অধিদপ্তরের কাছে সংরক্ষিত থাকবে এবং ভবিষ্যতে আদালতে ব্যবহারের জন্য আর্কাইভ সিস্টেমে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে।
আরও পড়ুন
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, তদন্ত কমিটিতে ন্যূনতম অভিযুক্তের সমপদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে নেতৃত্বে রাখতে হবে এবং কর্মকর্তাদের তদন্তে কোনো কর্মচারীকে সদস্য করা যাবে না। সাধারণত ১৫ কর্মদিবস সময় দিয়ে তদন্ত সম্পন্ন করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরএইচটি/এমএন