এক যুগেও হয়নি পদোন্নতি, দেশজুড়ে সরকারি কলেজে প্রভাষকদের কর্মবিরতি

সারা দেশের সরকারি কলেজগুলোতে ‘নো প্রমোশন, নো ওয়ার্ক’ কর্মসূচি পালন করেছেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের পদোন্নতি বঞ্চিত প্রভাষকরা।
রোববার (১৬ নভেম্বর) ৩২তম থেকে ৩৭তম বিসিএস ব্যাচের প্রভাষকেরা এ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কর্মসূচির কারণে বেশির ভাগ সরকারি কলেজেই আজ পাঠদান বন্ধ ছিল। অনুষ্ঠিত হয়নি ইনকোর্স, ক্লাস টেস্টসহ বিভিন্ন পরীক্ষা।
প্রভাষকদের অভিযোগ, বিগত ১২ বছর ধরে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের প্রভাষক পদে কর্মরত শত শত কর্মকর্তা প্রথম পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ৩২তম ও ৩৩তম বিসিএস ব্যাচের চার শতাধিক কর্মকর্তা চাকরিতে যোগদানের এক যুগ পরেও পদোন্নতি পাননি। এ ছাড়া ৩৪তম বিসিএসের ১০ বছর, ৩৫তমের ৯ বছর, ৩৬তমের ৮ বছর এবং ৩৭তম বিসিএসের ৭ বছর পার হলেও তারা সহকারী অধ্যাপক পদে উন্নীত হননি।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুপুরে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার প্রভাষক পরিষদ, ঢাকা কলেজ ইউনিটের উদ্যোগে পৃথকভাবে কর্মবিরতি ও মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করা হয়।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলেন, পদোন্নতির সব শর্ত পূরণ করেও তারা উন্নীত হচ্ছেন না। এর জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গাফিলতিকে দায়ী। অনেক বেসরকারি কলেজ জাতীয়করণের ফলে বিসিএস পরীক্ষা ছাড়া রাতারাতি অনেক শিক্ষক ‘ক্যাডার সুবিধা’ পেয়ে সিনিয়রিটির দাবি তুলছেন, যা প্রকৃত ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদোন্নতি–প্রক্রিয়ায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্য সব ক্যাডারে নিয়মিত পদোন্নতি হলেও শিক্ষা ক্যাডারের প্রভাষকেরা বঞ্চিত-এ কথাও বলেন তারা।
এছাড়া প্রভাষকদের পদোন্নতির লক্ষ্যে গ্রেডেশনভুক্ত কর্মকর্তার সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য- ৩২তম বিসিএসে ৫৪ জন, ৩৩তমে ৩৬১ জন, ৩৪তমে ৬৩১ জন, ৩৫তমে ৭৪০ জন, ৩৬তমে ৪৬০ জন এবং ৩৭তম বিসিএসে ১৫৩ জন রয়েছেন।
ঢাকা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক শামীম আহম্মেদ বলেন, বিসিএস না দিয়েই অনেক শিক্ষক জাতীয়করণের কারণে রাতারাতি ক্যাডারের মতো সুবিধা পাচ্ছেন। তারা আমাদের ওপর সিনিয়রিটির দাবি তোলেন। অথচ আমরা বছরের পর বছর পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত। আমরা পদোন্নতির সব শর্ত পূরণ করেছি। আমাদের পদোন্নতি হলে সরকারের আর্থিক কোনো ক্ষতি হবে না, কারণ আমরা আগে থেকেই ওই বেতনস্কেল অতিক্রম করেছি। তাই দ্রুত পদোন্নতির প্রজ্ঞাপন জারির দাবি জানাই
এসময় শিক্ষকরা তিন দফা দাবি জানিয়েছেন। সেগুলো হচ্ছে-
১. শিক্ষা মন্ত্রণালয় দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করবে।
২. ২০০০ সালের বিধি অনুযায়ী জাতীয়করণের তারিখ থেকে ক্যাডারভুক্তির নিয়মিতকরণসংক্রান্ত অবৈধ প্রজ্ঞাপন বাতিল করতে হবে।
৩. প্রভাষকদের পদোন্নতির সরকারি প্রজ্ঞাপন দ্রুত জারি করতে হবে।
আরএইচটি/এমএসএ