প্রাথমিকের মেধা যাচাই পরীক্ষায় স্থগিতাদেশ : রিট খারিজে আপিল করবে সরকার

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ‘মেধা যাচাই পরীক্ষা’ আবারো আইনি জটিলতায় আটকে গেছে। কেরানিগঞ্জের একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ের পরিচালক ও দুজন অভিভাবকের দায়ের করা রিট মামলার প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট গত ১৭ ডিসেম্বর এই পরীক্ষা এক মাসের জন্য স্থগিত করার আদেশ দিয়েছেন। তবে এই স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে সরকার দ্রুত আপিল করতে চলেছে বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আদালতের সাময়িক স্থগিতাদেশ (স্টে অর্ডার) থাকায় আমরা এখন কোনো পরীক্ষা নিতে পারছি না। তবে আমরা এই রিটটি প্রত্যাহারের জন্য আইনগতভাবে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি এবং যত দ্রুত সম্ভব আদালতে আপিল দাখিল করা হবে।
তিনি আরও জানান, সরকারের পক্ষে দ্রুত আইনি পদক্ষেপের মাধ্যমে এই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে পরীক্ষা আয়োজনের চেষ্টা চলছে।
অন্যদিকে, হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের পর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তা এবং স্কুলগুলোর শিক্ষকদেরকে এখনো চূড়ান্ত কোনো নির্দেশনা পাঠানো হয়নি। ফলে প্রত্যন্ত এলাকার অনেক বিদ্যালয়ই এখনো এই আইনি জটিলতা সম্পর্কে পুরোপুরি অবগত নয়। স্থানীয় পর্যায়ে শিক্ষকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদপত্রে মেধা যাচাই পরীক্ষা স্থগিতের খবর পেলেও তা নিয়ে বিভ্রান্তি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গত ১১ নভেম্বরের স্মারক অনুযায়ী, এই পরীক্ষা ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে সম্প্রতি হাইকোর্টের বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মো. আসিফ হাসানের বেঞ্চ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মেধা যাচাই পরীক্ষা এক মাসের জন্য স্থগিতের আদেশ দিয়েছেন৷
আইনজীবী নিয়াজ মোর্শেদের বরাতে জানা গেছে, শুধুমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য এই পরীক্ষার আয়োজন হাইকোর্টের গত ৩ নভেম্বরের রায়ের লঙ্ঘন বলে বিবেচিত হয়েছে।
এর আগে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কেবল সরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি দিলে তা চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট করা হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩ নভেম্বর হাইকোর্ট বৃত্তি পরীক্ষায় বেসরকারি শিক্ষার্থীদেরও অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে নির্দেশনা দিয়েছিল। তবে ওই নির্দেশনার বিপরীতেও সরকারের পক্ষ থেকে আপিল করা হয়েছে।
আরএইচটি/এমএসএ