দেহটা দান করে দিতে চাই: এস আই টুটুল

Robiul Islam Jibon

২৮ এপ্রিল ২০২১, ০১:৪৭ পিএম


দেহটা দান করে দিতে চাই: এস আই টুটুল

এস আই টুটুল

ব্যান্ড, একক ক্যারিয়ার, নাটক, সিনেমা, স্টেজ সব মাধ্যমেই সাফল্যের দূতি ছড়িয়েছেন দেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী এবিএম শহীদুল ইসলাম টুটুল। লোকে যাকে এস আই টুটুল নামেই চেনেন। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ‘কেউ প্রেম করে কেউ প্রেমে পড়ে’, ‘যায় দিন যায় একাকী’, ‘নাম্বার ওয়ান শাকিব খান’, ‘যায় কী ছেড়া বুকের পাজর’সহ অনেক জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন তিনি। এখনো কাজ করে যাচ্ছেন সমাতালে। আজ এই শিল্পীর জন্মদিন। শুভেচ্ছা জানিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন রবিউল ইসলাম জীবন 

জন্মদিনে কী করছেন? 
এখন তো রমজান মাস। ইবাদত আর রোজা নিয়ে ব্যস্ত। এমন রোজা জীবনে আর কখনো পাই কী না তা তো জানি না। তাই এই রোজাটা যেন জীবনের শ্রেষ্ঠ রোজা হয় সেভাবেই পালন করার চেষ্টা করছি। আল্লাহকে ডাকছি। সন্ধ্যায় একটা মানবিক কাজ করব। 

সেটা কী? 
আমি কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের সদস্য। কোয়ান্টামে আমাদের গুরুজি শান্তিনগরে বসেন। তিনি এবং তার ওখান থেকে আমাকে নিমন্ত্রণ নেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যায় তাদের সঙ্গে ইফতার করব। সেখানে রক্তদান করব। এর আগেও কয়েকবার রক্ত দিয়েছি। আমার রক্তে একজন মানুষেরও যদি সামান্য উপহার হয় সেটাই আমার জন্য বড় প্রাপ্তি। 

রাতে দেখেছি গানবাংলা টেলিভিশন আপনার জন্মদিন পালন করেছে। 
কেক কাটার শুরুটা হয়েছিল ১২টা ১ মিনিটে। আমার স্ত্রী তানিয়া, মেয়ে আয়াত, আমাদের পরিবারের আরও সদস্য টনি, বেহেশস্তী, আসমা সবাই মিলে আমাকে সারপ্রাইজ দেয়। কেক নিয়ে আসে। সেটা কাটি, সবাই মিলে খাই। এ সময় ইউনুস নামে আমার এক বন্ধু কেক নিয়ে একটা ক্যাফেতে অপেক্ষা করছিলেন। সেখানে গিয়ে সেই কেকটা কাটি। এরমধ্যে গান বাংলা টিভি গাড়ি পাঠিয়ে দেয়। গিয়ে দেখি সেখানে ব্যাপক আয়োজন। আমি গিটার বাজাচ্ছি এমন ছবি দিয়ে তারা বিশেষ একটি কেক বানায়। জীবনে প্রথম এভাবে অনেক শিল্পীদের নিয়ে কেক কেটেছি। সবচেয়ে ভালো লেগেছে হামিন আহমেদ ভাই আমার সঙ্গে কেক কেটেছেন। এটা আমার জন্য দারুণ অনুভূতি ছিল। এমন আয়োজনের জন্য তাপস-মুন্নীকে ধন্যবাদ দিলেও কম হয়ে যাবে। আর দিনভর মানুষের কাছ থেকে যে ভালোবাসা পাচ্ছি তাতে আমি মুগ্ধ। 

Dhaka Post

এদিন কোন জিনিসটা সবচেয়ে বেশি মিস করেন?
চার-পাঁচ বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছিলাম। মা জন্মদিন পালনের বিষয়টি বুঝতেন না। তবে এক সময় বাসায় আলমারির একটা দরজা খুললে ঝরঝর করে অনেকগুলো গিফত পড়ত। এখন সেটা হয় না! আমার ছোট্ট মেয়ে আয়াত (৮) এবার আমাকে কার্ড বানিয়ে দিয়েছে। ছেলে শ্রেয়াস আমেরিকা থেকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে।

আপনি তো মরণোত্তর দেহ দান করতে চাইছেন।
হ্যাঁ। আমার ধর্মে যদি কোনো অসুবিধা না থাকে আমি আমার দেহটা দান করে দিতে চাই। আমি চাই জীবনটাকে মানবকল্যাণে উৎসর্গ করতে। মরার পর দেহের অপ্রয়োজনীয় অংশটুকু দিয়ে একটা সমাধি হলেই চলবে। সেটা আমার পরিবার, ছেলেমেয়েরা দেখবে। 

এবার বলুন নতুন কী কাজ করছেন?
বর্তমানে কিছু নাটকের ব্র্যাকগাউন্ড করছি, সিনেমার গান বানাচ্ছি। সামনে নিজেরও কিছু গান আসবে। তবে আমি মনে করি আমার দায়িত্ব সৃষ্টিকর্তার। সে জন্য কাজ নিয়ে আমার কোনো অস্থিরতা নেই। আর এখনকার অনলাইন-ইউটিউবে গান প্রকাশ আমার খুব একটা ভালো লাগে না। ফেসবুকে কার কত ফলোয়ার সেটা দিয়ে আমি শিল্পীকে বিচার করি না। 

আপনার ব্যান্ড ‘ধ্রুবতারা’র খবর কী? 
সম্প্রতি আমরা লস অ্যাঞ্জেলসভিক্তিক ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান গ্যালাক্সির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। বর্তমানে তারাই আমাদের শোর বিয়ষটি দেখছে। সামনেই আমাদের নতুন গান আসবে। 

জীবনে আর কী চাওয়া বাকি আছে? 
জন্মদিনে বিভিন্ন মাধ্যমে মানুষের ভালোবাসা দেখেই বুঝছি আমি কত সৌভাগ্যবান। মানুষের জীবনে অনেক না পাওয়া থাকে। অনেক পাওয়াও থাকে। মরে যাওয়ার যে তৃপ্তিটা লাগে সেটা আমার হয়েছে। যতটুকু বেঁচে আসছি ততটুকু আর হয়তো বাঁচতে পারব না। নিজের অতীত জীবনের গুনাহগুলো যেন মাফ নিয়ে মরতে পারি। আমার আল্লাহ এবং মানুষ যেন আমাকে মাফ করে দেন।

Link copied