হুমায়ূন আহমেদ : টেলিভিশন-সিনেমায় যার অমর উপস্থিতি

বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় কথাশিল্পী ও চলচ্চিত্রকার হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০১২ সালের এই দিনে (১৯ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে প্রয়াণ ঘটে তার। পরবর্তীতে তাকে গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে সমাহিত করা হয়।
নন্দিত এই সাহিত্যিক ছিলেন একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার, গীতিকার, নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। সাহিত্যের পাশাপাশি টেলিভিশন ও সিনেমা অঙ্গনেও তিনি রেখে গেছেন এক অমর উপস্থিতি। আজ (শনিবার) তার চলে যাওয়ার ১৩ বছর পূর্ণ হলো। বলা বাহুল্য, এই কিংবদন্তিকে হারিয়ে দেশের সাহিত্য ও বিনোদন জগৎ এক অপূরণীয় ক্ষতির শিকার হয়েছে, এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে পর্দার জগতে এখনও অমর এই কিংবদন্তি।
নাটক, চলচ্চিত্র ও সাহিত্যে ছিল হুমায়ূন আহমেদের একক আধিপত্য। অসাধারণ লেখনী আর নির্মাণশৈলী দিয়ে জয় করেছিলেন কোটি পাঠক ও দর্শকদের হৃদয়। সাহিত্যের পাশাপাশি নির্মাণ করেছেন চলচ্চিত্র; যা এখনও দর্শকের হৃদয়ে গেঁথে রয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য— ‘আগুনের পরশমণি’, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘চন্দ্রকথা’, ‘ঘেটুপুত্র কমলা’।
আরও পড়ুন
এই কিংবদন্তি ছোট পর্দায়ও রেখেছেন তার অবিস্মরণীয় অবদান। ইন্টারনেট যুগ শুরুর আগেই দেশের টেলিভিশন খুললেই চোখে পড়ত হুমায়ূনের গল্পে নির্মিত নাটক। ‘বহুব্রীহি’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘আজ রবিবার’, ‘তারা তিনজন’। বলা বাহুল্য, এমন অসংখ্য নাটক বছরের পর বছর ধরে দর্শকদের আনন্দ দিয়ে এসেছে। এখনও সামাজিক মাধ্যমে ঘুরে ফিরে দেখা যায় সেই দৃশ্যগুলো; দর্শক ফিরে যান ফেলে আসা সময় কিংবা শৈশবে।
শুধু তাই নয়, হিমু ও মিসির আলির মতো চিরস্মরণীয় চরিত্র সৃষ্টি করে পাঠকদের মাঝে আলোড়ন তৈরি করেছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। এখন প্রযুক্তি ও ইন্টারনেটের পরিসর বেড়ে যাওয়ায় সেই গল্প-সাহিত্যগুলো পাওয়া যাচ্ছে অডিওবুক আকারে; যেগুলো নিয়মিত শুনছেন শ্রোতারা। তবে শুধু বাংলাদেশের শ্রোতারাই নয়, এখন ওপার বাংলার পাঠক শ্রোতারাও মুগ্ধ হুমায়ূন আহমেদের লেখনি, সাহিত্যিকতায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করলেও লেখালেখির প্রতি ভালোবাসা এবং চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রতি প্রবল আগ্রহ তাকে নিয়ে যায় সৃজনশীল জগতে। হিমু ও মিসির আলির মতো চিরস্মরণীয় চরিত্র সৃষ্টি করে তিনি হয়ে উঠেছেন কোটি পাঠকের প্রিয় লেখক। তার লেখায় জীবন্ত হয়ে উঠেছে বাঙালি, বিশেষ করে মধ্যবিত্ত শ্রেণির যাপিত জীবন। আজ ১৩ বছর পর ইন্টারনেটের যুগেও তার মৃত্যুবার্ষিকীতে অগণিত ভক্ত গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করছেন এই কথার জাদুকরকে; তাই বলাই যায় এখনও অমর এই কথা সাহিত্যিক।
ডিএ