জনবলের অভাবে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার যন্ত্রপাতি

পুলিশ এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসাসেবায় গুণগত মান বাড়াতে দেশের ১৩ জেলায় পুলিশ হাসপাতালের আধুনিকীকরণ করার উদ্যোগ নেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ পুলিশ ও গণপূর্ত অধিদপ্তর। তবে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কোনো নিয়মনীতি মানা হয়নি। জনবলের অভাবে হাসপাতালগুলোর কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতিও নষ্ট হচ্ছে। সমীক্ষা ছাড়া বাস্তবায়ন করা প্রকল্পটিতে নানা ধরনের অনিয়ম ও অবহেলার চিত্র উঠে এসেছে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রকল্পের সমাপ্তি প্রতিবেদনে (পিসিআর)।
‘বিদ্যমান পুলিশ হাসপাতালসমূহের আধুনিকীকরণ’ প্রকল্পটি মোট ২৯২ কোটি সাত লাখ টাকায় বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রকল্পটি সম্পূর্ণ সরকারি অর্থে বাস্তবায়ন করা হয়। ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে না পারায় ব্যয় বাড়ানোর পাশাপাশি প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়
সংশ্লিষ্টরা জানান, ‘বিদ্যমান পুলিশ হাসপাতালসমূহের আধুনিকীকরণ’ প্রকল্পটি মোট ২৯২ কোটি সাত লাখ টাকায় বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রকল্পটি সম্পূর্ণ সরকারি অর্থে বাস্তবায়ন করা হয়। ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে না পারায় ব্যয় বাড়ানোর পাশাপাশি প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। প্রকল্পটির মোট মেয়াদে প্রকৃত ব্যয় হয়েছে ২৬৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা। সে হিসাবে ২৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয় হয়নি। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ৩৬ মাস অতিরিক্ত সময় লেগেছে অর্থাৎ টাইম ওভার রান হয়েছে ১০০ শতাংশ।

জানা যায়, প্রকল্পটি মোট পাঁচ বিভাগের ১৩টি জেলায় বাস্তবায়িত হয়েছে। এটি গ্রহণের আগে কোনো সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়নি। এটি বাস্তবায়নে মোট মেয়াদকালে দুজন প্রকল্প পরিচালক অতিরিক্ত দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। এ প্রকল্পে একটি জিপগাড়ি ও ১৩টি অ্যাম্বুলেন্স ক্রয় করা হয়। হাসপাতাল ভবন, ডরমিটরি ভবন, ইলেক্ট্রিক্যাল যন্ত্রাংশ ও মেডিকেল ইকুইপমেন্ট ক্রয়ের সংস্থান ছিল প্রকল্পের আওতায়।
প্রকল্পের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে পিআইসি ও পিএসসি কমিটি গঠন করা হয়। ডিপিপিতে উল্লিখিত টিওআর অনুসারে পিআইসি ও পিএসসি সভা সঠিকভাবে করা হয়নি, যা অনাকাঙ্ক্ষিত। প্রকল্পের মোট ক্রয় পরিকল্পনা অনুসারে পণ্য প্যাকেজে মোট ব্যয়ের ৭০ কোটি ৯২ লাখ টাকা, যা মোট ব্যয়ের ২৪.২৮ শতাংশ। অপরদিকে, কার্য প্যাকেজে মোট ব্যয়ের ২১১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা সংস্থান রাখা হয়, যা মোট ব্যয়ের ৭২.৫৮ শতাংশ
আইএমইডি’র পিসিআর প্রতিবেদনে দেখা গেছে, প্রকল্পের আওতায় ক্রয় করা জিপ ও অ্যাম্বুলেন্সগুলো টিএন্ডওইভুক্ত করা হয়নি। প্রকল্পের আওতায় ব্যয় করা অর্থের বিষয়ে কোনো অডিট সম্পাদন হয়নি, ক্রয় করা সব যানবাহন ও যন্ত্রপাতির সুষ্ঠু ব্যবহার ও সংরক্ষণে কোনো সম্পদ বহি সংরক্ষণ করা হয়নি। এ ছাড়া ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে মনিটরিং ও পরিদর্শন কার্যক্রমের নিমিত্তে কোনো সাইট বই সংরক্ষণ করা হয়নি। প্রকল্পটি শেষ হওয়ার পর টেকসই করার ক্ষেত্রে ডিপিপিতে কোনো এক্সিট প্ল্যানও করা নেই।
আরও পড়ুন
প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, প্রকল্পের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে পিআইসি ও পিএসসি কমিটি গঠন করা হয়। ডিপিপিতে উল্লিখিত টিওআর অনুসারে পিআইসি ও পিএসসি সভা সঠিকভাবে করা হয়নি, যা অনাকাঙ্ক্ষিত। প্রকল্পের মোট ক্রয় পরিকল্পনা অনুসারে পণ্য প্যাকেজে মোট ব্যয়ের ৭০ কোটি ৯২ লাখ টাকা, যা মোট ব্যয়ের ২৪.২৮ শতাংশ। অপরদিকে, কার্য প্যাকেজে মোট ব্যয়ের ২১১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা সংস্থান রাখা হয়, যা মোট ব্যয়ের ৭২.৫৮ শতাংশ। প্রকল্পটি শেষ হয়েছে ২০২২ সালের জুনে, তবে প্রকল্পের সমাপ্তির তিন মাসের মধ্যে আইএমইডিতে প্রেরণের প্রচলন থাকলেও আলোচ্য পিসিআরটি ২০২৪ সালের মে মাসে প্রেরণ করা হয়েছে অর্থাৎ ২৩ মাস পর।
কক্সবাজারের হাসপাতালের কোনো পরিচ্ছন্নতাকর্মী, আয়া, ওয়ার্ড বয় ইত্যাদি জনবল না থাকায় ভবনটি অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় থাকে। হাসপাতালের জন্য বরাদ্দ করা অনেক মেডিকেল যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়নি। অপারেশন থিয়েটারের জন্য স্থাপিত যন্ত্রপাতিগুলো অনেক দিন ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় আছে। যে কারণে এগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রয়োজনীয় ডাক্তার ও জনবল না থাকায় প্রকল্পের উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হচ্ছে না
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কক্সবাজারের হাসপাতালের কোনো পরিচ্ছন্নতাকর্মী, আয়া, ওয়ার্ড বয় ইত্যাদি জনবল না থাকায় ভবনটি অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় থাকে। হাসপাতালের জন্য বরাদ্দ করা অনেক মেডিকেল যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়নি। অপারেশন থিয়েটারের জন্য স্থাপিত যন্ত্রপাতিগুলো অনেক দিন ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় আছে। যে কারণে এগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রয়োজনীয় ডাক্তার ও জনবল না থাকায় প্রকল্পের উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হচ্ছে না।

হাসপাতালের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তারা জানান, কক্সবাজার হাসপাতাল ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা গেছে এবং ভবনের কয়েক জায়গা ড্যাম হয়ে গেছে। গণপূর্ত বিভাগ থেকে পুলিশ ভবনটি বুঝে নিয়েছে। ডিপিপিতে উল্লিখিত ভবনের প্রধান ফটকটি অন্য সব জায়গায় গ্লাস ডোর ব্যবহার করা হয়েছে। অথচ এ হাসপাতালে প্রধান ফটকে গ্লাস ডোর ব্যবহার না করে কলাপসিবল গেট বসানো হয়েছে। কলাপসিবল গেটটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করেই বসানো হয়েছে।
আরও পড়ুন
খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, এ প্রকল্পের আওতায় রংপুরে চার তলা ভিতসহ তিন তলা ভবন নির্মাণ করা হয়। প্রকল্পের আওতায় একটি জেনারেটর স্থাপন করা হয়। তবে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, জেনারেটরটি অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে।
আইএমইডি জানায়, কক্সবাজার হাসপাতালের ভবনটিতে কেন গ্লাস ডোর স্থাপন করা হয়নি— এর সদুত্তর দিতে পারেননি গণপূর্ত বিভাগের প্রতিনিধি। বিষয়টি স্পষ্টতই দায়িত্ব অবহেলা ও ঠিকাদারের শর্ত ভঙ্গের শামিল। হাসপাতালের সব মালামালের সুষ্ঠু হিসাব রাখা এবং সরকারি সম্পত্তি রক্ষার স্বার্থে একটি সম্পদ বই সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। এ ছাড়া হাসপাতালে দ্রুত পরিচ্ছন্নতাকর্মী, আয়া, ওয়ার্ড বয় ইত্যাদি জনবল সংযুক্ত করা প্রয়োজন। এসব বিষয়ে পুলিশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে।
আইএমইডি আরও জানায়, রংপুরের হাসপাতালের বিষয়ে গণপূর্ত (বিদ্যুৎ) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছেও জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে, ভবনে একটি লিফট স্থাপন করা আছে, কিন্তু কিছু দিন ব্যবহারের পর লিফটটি বন্ধ হয়ে যায়। এটি কেন অচল আছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করা হয়নি বিধায় ডরমিটরি ভবনটি অব্যবহৃত থাকায় ভবনটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, কক্সবাজারের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহৎ হাসপাতাল পুলিশের। কিন্তু প্রকল্পের কাজ অনেক আগে শেষ হলেও হাসপাতাল শুরু করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এটি চালু হলে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা এবং তাদের পরিবারের সদস্যসহ সবাই চিকিৎসাসেবা নিতে পারবেন। হাসপাতালে সব উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্রাংশ বসানো হয়েছে। কিন্তু জনবলের কারণে হাসপাতালটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। পুলিশ অধিদপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনেকবার জানানোর পরও তারা উদ্যোগ নেয়নি— অভিযোগ ওই কর্মকর্তার।
হাসপাতালগুলোর কার্যক্রম শুরু করা হচ্ছে না কেন— এমন প্রশ্নে সেন্ট্রাল পুলিশ হাসপাতালের অ্যাডিশনাল ডিআইজি মো. এমদাদুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমি মিটিংয়ে আছি। আপনি সরাসরি এসে কথা বলেন।’ এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটির ডেপুটি ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এ কে এনামুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘একই অবস্থায় দেশের আরও অনেক হাসপাতাল পড়ে আছে। অনেক হাসপাতাল প্রস্তুত হয়ে আছে, কিন্তু হস্তান্তর করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। কনস্ট্রাকশন করেছে একটা ডিপার্টমেন্ট, কিন্তু যারা রিসিভ করবে সেখানে লোক পাওয়া যাচ্ছে না। প্রজেক্ট ডকুমেন্টে কিন্তু শর্ত দেওয়া ছিল। একনেকের ডিপিপি বাস্তবায়নের পরিকল্পনায় শর্ত দেওয়া থাকে, প্রজেক্ট শেষ হলে চলবে কীভাবে। আমি অবাক যে, পরিকল্পনা ছাড়াই কি তারা প্রকল্প পাস করেছে?’
আরও পড়ুন
‘আমাদের দেশে এক দলের ইচ্ছা হচ্ছে শুধু কনস্ট্রাকশন করা। হাসপাতাল চলল কি না, সে বিষয়ে তাদের কোনো ইন্টারেস্ট নাই। ওই দলের কাজই হচ্ছে, একটা হাসপাতাল বানিয়ে আরেকটা বানাব। অথচ হাসপাতাল চালানোটা আরেক জনের দায়িত্ব। এখন দুই দলের সমন্বয়ের অভাব হলে তো হাসপাতাল চালু হওয়ার কোনো কারণ নাই। ডকুমেন্টে শর্ত হিসেবে আছে, কিন্তু এটা পালন হলো না কেন— বিষয়টি দেখা উচিত। এটা না হলে অর্থের অপচয় হবে, সম্পদও নষ্ট হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে ড. এ কে এনামুল হক বলেন, ‘এই প্রকল্পে সমীক্ষা না হওয়ার বিষয়টি আমাকে অবাক করেছে। সমীক্ষা না করে তো প্রকল্প নেওয়া উচিত নয়। সরকারি টাকার প্রকল্পে অপচয় বেশি হওয়ায় সমীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। আমার কাছে মনে হয়েছে, শুধুমাত্র কনস্ট্রাকশন করার জন্য প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য নয়। অথচ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো মানুষকে সেবা দেওয়া। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত।’
প্রকল্পটির বিষয়ে যেসব সুপারিশ করেছে আইএমইডি
প্রকল্পটির যথাযথ বাস্তবায়নের বিষয়ে বেশকিছু সুপারিশ করেছে সরকারের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। সুপারিশগুলো হলো—
ক. প্রকল্পে ভবন নির্মাণ হলেও জনবল নিয়োগপ্রাপ্ত না হওয়ায় এটির উদ্দেশ্য পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। আধুনিক যন্ত্রপাতিগুলো সচল রাখার লক্ষ্যে দ্রুত হাসপাতালগুলো চালু করার ব্যবস্থা গ্রহণ একান্ত প্রয়োজন। এ বিষয়ে পুলিশ অধিদপ্তর ও প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় দৃষ্টি দিতে পারে।
খ. প্রকল্পটি গ্রহণের আগে কোনো ফিজিবিলিটি সমীক্ষা করা হয়নি। যার কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ১০০ শতাংশ টাইম ওভার রান হয়েছে। পরিকল্পনা বিভাগের ২০১৬ সালের অক্টোবরে জারি করা পরিপত্র অনুসারে, অবশ্যই এটির ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি করার কথা। কিন্তু আলোচ্য প্রকল্পের ক্ষেত্রে এ বিধান অনুসরণ করা হয়নি। ভবিষ্যতে প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে পরিকল্পনা বিভাগের সর্বশেষ অর্থাৎ ২০২২ সালের জুনে জারি করা পরিপত্র অনুসারে ৫০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে বিনিয়োগ প্রকল্পের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আবশ্যিকভাবে সমীক্ষা করাতে হবে। ওই বিধান অনুযায়ী, আবশ্যিকভাবে ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি করার বিষয়ে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা।
গ. পুলিশ অধিদপ্তরের আওতায় প্রকল্পগুলো সুষ্ঠু ও সঠিক সময়ে শেষ করাসহ নির্মাণ কার্যগুলো মানসম্পন্নভাবে বাস্তবায়নকাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং সেল গঠন করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলো।
ঘ. প্রকল্পের আওতায় ক্রয় করা একটি জিপ ও ১৩টি অ্যাম্বুলেন্স পুলিশ হাসপাতালের অনুকূলে টিএন্ডওইভুক্ত নিশ্চিত করার নিমিত্তে দ্রুত প্রশাসনিক কার্যক্রম গ্রহণপূর্বক বাস্তবায়নের জন্য প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলো।

ঙ. প্রকল্পের আওতায় মেডিকেল যন্ত্রপাতি, কম্পিউটার, অফিস সরঞ্জাম, আসবাবপত্র ও অন্যান্য মালামাল কেনা হয়েছে। সরকারি সম্পত্তির সুষ্ঠু ব্যবহার ও সংরক্ষণের স্বার্থে এসব মালামালের গায়ে প্রকল্পের নাম খচিত করে একটি সম্পদ বহি সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। এ সম্পদ বহির এক কপি প্রশাসনিক শাখায় এবং এক কপি প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ে জমা করা প্রয়োজন।
চ. সমাপ্ত প্রকল্পের অনুকূলে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মোট ৭৪টি পদ সৃজনের বিষয়ে ২০২৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় দ্রুত পদসৃজনের সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদনকরত জনবল নিয়োগের বিষয়ে পুলিশ অধিদপ্তর ও প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ে দৃষ্টিপাত করতে পারে।
ছ. পিসিআর-এ অডিট সংক্রান্ত কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে অডিট করানো একান্ত আবশ্যক। সে আলোকে আগামী তিন মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলার এ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট অডিট সম্পাদন করে আইএমইডি’কে অবহিত করার বিষয়ে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
জ. প্রকল্পটি বাস্তবায়ন মেয়াদকালে দুজন প্রকল্প পরিচালক অতিরিক্ত দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ সেবামূলক এ প্রকল্প সুষ্ঠু ও পরিপূর্ণভাবে সম্পাদনের নিমিত্তে নিয়মিতভাবে একজন দক্ষ প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের কোনো বিকল্প নেই। প্রকল্প বাস্তবায়নকালীন পরিকল্পনা বিভাগের ২০১৬ সালের জুনের পরিপত্র অনুসারে ৫০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে বিনিয়োগ প্রকল্পের জন্য নিয়মিতভাবে একজন প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের আবশ্যকতা ছিল। কিন্তু বিষয়টি যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়নি। অপরদিকে, ২০২২ সালের জুনে পরিকল্পনা বিভাগের জারি করা সর্বশেষ পরিপত্রের নির্দেশনা মতে ভবিষ্যতে বিনিয়োগ প্রকল্পের ক্ষেত্রে নিয়মিতভাবে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
এসআর/এমএআর