থিসিস যেন মানুষের কাজে আসে: দেশের কল্যাণে গবেষণার আহ্বান বিএমইউ ভিসির

থিসিস শুধু ডিগ্রি অর্জনের উপায় নয়, বরং তা হতে হবে সমাজ ও মানুষের উপকারে আসা গবেষণার ভিত্তি— এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম। তিনি বলেছেন, থিসিস গ্র্যান্ট ও গবেষণার জন্য বরাদ্দ অর্থ যেন বিফলে না যায়। এই অর্থ মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করতে হবে। গবেষণায় এমন বিষয় বেছে নিতে হবে যাতে দেশ ও বিজ্ঞানের উন্নয়ন হয়।
মঙ্গলবার (৩ জুন) বিএমইউর এ ব্লক অডিটোরিয়ামে আয়োজিত থিসিস গ্র্যান্ট প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন অধ্যাপক শাহিনুল আলম। এতে উচ্চতর চিকিৎসা শিক্ষায় অধ্যয়নরত ৫৪৯ জন রেসিডেন্ট চিকিৎসককে থিসিস গ্র্যান্ট প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) ও থিসিস গ্র্যান্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ভিসি অধ্যাপক ডা. শাহিনুল আলম।
তিনি বলেন, বর্তমানে থিসিস পাবলিকেশনের হার অত্যন্ত কম। এই হার বাড়াতে হবে। ইনডেক্স জার্নাল, বিএমইউ জার্নাল বা বিএমডিসি স্বীকৃত জার্নালে গবেষণা প্রকাশের দিকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, গুণগত মানের চিকিৎসা শিক্ষা, চিকিৎসাসেবা ও গবেষণা করতে হলে রিসার্চ মেথডলজি, রিসার্চ গ্যাপসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো ভালোভাবে জানতে হবে। গবেষণার বিষয় বড় হতে হবে— এমন নয়। অনেক সময় ছোট ডেটা বা ছোট গবেষণাও মানুষের বড় উপকারে আসে। ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির গবেষণা তার বড় উদাহরণ।
ভিসি বলেন, দেশের সামগ্রিক গবেষণায় স্বাস্থ্যখাত পিছিয়ে নেই। এখানে চিকিৎসক সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। স্বাস্থ্যখাতে গবেষণা দিনে দিনে বাড়ছে। আমাদের আরও গুণগত ও ফলপ্রসূ গবেষণার দিকে যেতে হবে।
তিনি আরও যোগ করেন, বিশ্ব আজ প্রতিযোগিতার জায়গা। এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে চিকিৎসকদেরও নিজেদের মান ও দক্ষতা বাড়াতে হবে। আর বড় কোনো পরিবর্তনের জন্য অনেক মানুষের দরকার হয় না, কিছু সংখ্যক সচেতন ও আন্তরিক গবেষকও একটি খাতের মৌলিক পরিবর্তন আনতে পারেন।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, রেসিডেন্টরা আগামী দিনের কর্ণধার। চিকিৎসা শিক্ষা, চিকিৎসাসেবা ও গবেষণায় গুণগত মান বৃদ্ধি করে সামগ্রিক স্বাস্থ্যখাতকে পরিবর্তন করার দায়িত্ব তাদেরই নিতে হবে।
তিনি বলেন, বৈষম্যহীনভাবে সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে থিসিস গ্র্যান্ট দেওয়া হয়েছে। থিসিসের জন্য অর্থ বরাদ্দের পরিমাণও এবার বৃদ্ধি করা হয়েছে। আমরা আশা করি, রেসিডেন্টরা মানসম্মত ও রোগীবান্ধব থিসিস করে জনগণের সামনে নতুন আশার আলো নিয়ে আসবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএমইউর প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিএমইউর উপ-রেজিস্ট্রার-১ ও থিসিস গ্র্যান্ট কমিটির সদস্য সচিব ডা. একেএম কবির আহমেদ রিয়াজ।
টিআই/এমজে