মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের বিরোধিতায় জাপানে হাজারও মানুষের বিক্ষোভ

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে জাপানের রাজধানী টোকিওতে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। রোববার দেশটির রাজধানীতে কোনও ধরনের স্লোগান ছাড়া নীরব বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় অনেকের হাতে মিয়ানমারের গৃহবন্দি নেত্রী অং সান সু চির ছবি দেখা যায়। মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের বিরোধিতায় জাপানে এই বিক্ষোভকে বৃহত্তম বলা হচ্ছে।
বিক্ষোভের আয়োজকরা বলেছেন, চার হাজারের বেশি মানুষ জাপানে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। রাজধানী টোকিওর উপশহরের শিবুয়া এবং ওমোটেসান্দাে এলাকায় এই বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভকারীদের হাতে ‘মিয়ানমারকে রক্ষা করতে আমাদের সহায়তা করুন’, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ বন্ধ করুন’ লেখা পোস্টার দেখা যায়। টোকিও পুলিশ বলছে, বিক্ষোভে কতসংখ্যক মানুষ অংশ নিয়েছেন; সেব্যাপারে তারা মন্তব্য করতে পারবে না।
গত ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে জাপানে বেশ কয়েকবার বিক্ষোভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে; তবে এই বিক্ষোভকারীদের বেশিরভাগই জাপানে বসবাসরত মিয়ানমারের নাগরিক।
অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে মিয়ানমারে টানা নবমদিনের মতো রোববার লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন।
মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চিকে আটকে রাখার সময় আগামীকাল সোমবার শেষ হয়ে আসছে। পশ্চিমা বিশ্ব মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের তীব্র নিন্দা জানিয়ে গণতন্ত্রের যাত্রা অব্যাহত রাখতে দেশটির সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। সামরিক অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া মিয়ানমারের বেশ কয়েকজন জেনারেলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। অন্যান্য অনেক দেশও একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে।
এদিকে, জাপান এবং এশিয়ার কয়েকটি দেশ এই অঞ্চলে কৌশলগত গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন না করার আহ্বান জানিয়েছে। মিয়ানমারে বিক্ষোভের কথা উল্লেখ করে জাপানে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ইয়াঙ্গুনের বাসিন্দা জ্য তুন (৪৫) বলেন, ‘এটি খুবই হৃদয়বিদারক।’
তিনি বলেন, ‘আমি তাদের সঙ্গে যোগ দিতে মিয়ানমারে যেতে চাই। কিন্তু পরিস্থিতির (করোনাভাইরাস মহামারিতে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা) কারণে যেতে পারছি না। এর পরিবর্তে আমি যা করতে পারি সেটাই করেছি; এখানে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছি।’
টোকিওর বিক্ষোভে অনেকের হাতে অং সান সু চির প্রতিকৃতি, অনেকে মুখোশ পরে এবং কারও কারও হাতে সু চির ছবি দেখা যায়।
করোনাভাইরাসের বিস্তার যাতে না হয়; সেজন্য টোকিওতে এই বিক্ষোভ সুনসান নীরবতায় পালন করা হয়। কারও মুখে কোনও ধরনের স্লোগান শুনতে পাওয়া যায়নি।
জাপানের একটি নির্মাণ কোম্পানিতে কর্মরত ২৭ বছর বয়সী থিউ থিউ তুন বলেন, মিয়ানমারের একজন নাগরিক হিসেবে আমি দেশে সামরিক অভ্যুত্থান একেবারে মেনে নিতে পারছি না। আমি মনে করি, জাপানে মিয়ানমারের যত নাগরিক আছেন; তাদের সবার মতামত আমার মতোই।
সূত্র: রয়টার্স।
এসএস