মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চায় না সিঙ্গাপুর

সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে ‘উদ্বেগজনক পরিস্থিতি’ তৈরি হলেও দেশটির বিরুদ্ধে ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিপক্ষে সিঙ্গাপুর। এর কারণ হিসেবে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়েন বালাকৃষ্ণান বলেছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হলে মিয়ানমারের সাধারণ জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরের পার্লামেন্টে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান তাদের সরকারের এ অবস্থান তুলে ধরে বলেন, ‘১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটির নেত্রী অং সান সু চিসহ তার দলের কর্মী-সমর্থকদের আটক ও গ্রেপ্তার, সরকারের মন্ত্রী-আইনসভার সদস্য-কর্মকর্তা কর্মচারীদের গ্রেপ্তার, বিভিন্ন শহরে সেনাসদস্যদের টহল, পুলিশ-বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ…এই বিষয়গুলো আসলে দেশটির সাম্প্রতিক উদ্বেগজনক পরিস্থিতির লক্ষণ।’
‘মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রতি আমাদের জোর দাবি থাকবে, তারা যেন যত দ্রুত সম্ভব অং সান সু চি ও আটক অন্যানদের মুক্তি দেয় এবং আলোচনার মাধ্যমে তাদের মধ্যকার সমস্যার সমাধান বের করে।’
‘তবে সামরিক অভ্যুত্থানের প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত হবে না আমাদের। কারণ, আমরা যদি এমন কোনো পদক্ষেপ নেই, তাহলে তার মূল ভূক্তভোগী হবে দেশটির সাধারণ জনগণ।’
সিঙ্গাপুর ও মিয়ানমার উভয়ই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর আঞ্চলিক সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ ইস্ট এশিয়ান নেশনস বা আসিয়ানের সদস্য। সংগঠনের নীতি অনুযায়ী আসিয়ানভূক্ত দেশগুলো একে অপরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ থেকে নিজেদের বিরত রাখে। এছাড়া মিয়ানমারে সিঙ্গাপুরের বিপুল বিনিয়োগও রয়েছে।
তবে সংগঠনের অপর দুই সদস্যদেশ ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া ইতোমধ্যে মিয়ামারের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে আসিয়ানের বিশেষ বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে।
১ ফেব্রুয়ারি ভোরে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দল এনএলডির নেত্রী সু চি ও প্রেসিডেন্ট মিন্টসহ শীর্ষস্থানীয় নেতাদের গ্রেপ্তার করে দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেয় সামরিক বাহিনী। বিশ্ব সম্প্রদায়ের নিন্দা ও মুক্তির আহ্বান সত্ত্বেও সু চিসহ আটক নেতাদের বন্দি করে রেখেছে সামরিক জান্তা।
সামরিক শাসনের অবসান ও সু চিসহ সব রাজনৈতিক বন্দির মুক্তির দাবিতে গত কয়েক দিন ধরে মিয়ানমার ব্যাপক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ দেখেছে। এ পরিস্থিতি প্রধান প্রধান শহরগুলোতে সেনা ও সাঁজোয়া যান মোতায়েন করেছে সামরিক কর্তৃপক্ষ।
সূত্র: রয়টার্স
এসএমডব্লিউ