প্যাংগং সীমান্ত থেকে সব সেনা সরিয়েছে ভারত-চীন

গত বছরের জুনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর হিমালয়ের বিতর্কিত সীমান্ত এলাকায় মোতায়েন সব সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে ভারত ও চীন। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে রোববার এক যৌথ বিবৃতিতে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। খবর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির।
ভারত সরকারের দেওয়া ওই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী গত শনিবার পূর্ব লাদাখের প্যাংগং লেক এলাকা থেকে সেনাদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ সম্পন্ন হয়। গত জুনে সীমান্ত বিভাজনকারী লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের (এলএসি) সংঘর্ষে দুই দেশের ২৪ সেনা প্রাণ হারায়।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী উভয়পক্ষই সীমান্ত বিভাজনকারী রেখার অন্যান্য এলাকাগুলোতেও উত্তেজনা নিরসনের বিষয়ে একমত হয়েছে।
গত ১১ ফেব্রুুয়ারি সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় ভারত ও চীন। সেনা প্রত্যাহার কেমন চলছে তার উন্নতি পর্যালোচনার জন্য গত শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) উভয়পক্ষের সামরিক কমান্ডারদের মধ্যে বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি।

রোববারের বিবৃতি অনুযায়ী, ‘উভয়পক্ষ প্যাংগং লেক এলাকায় সম্মুখ সীমান্তের সেনা প্রত্যাহার সফলভাবে সমাপ্তির প্রশংসা করেছে। এটি ছিল একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। এতে এলএসি বরাবর বাকি সমস্যার সমাধানের জন্য একটি ভালো ভিত্তি তৈরি হয়েছে।’
উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত আসতে দুই দেশের শীর্ষ সামরিক পর্যায়ের নয়টি বৈঠক হয়েছে। অন্যদিকে বিবৃতিতে স্বীকার করা হয়েছে, বিতর্কিত সীমান্তের অন্যান্য অংশ উত্তেজনাপূর্ণ রয়ে গেছে এবং এসব সমস্যা সমাধানের জন্য আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘উভয়পক্ষই তাদের রাষ্ট্রীয় নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ ঐকমত্য অনুসরণ করতে একমত হয়েছে। আলোচনা-সংলাপ অব্যাহত থাকবে। পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে এবং স্থলভাগে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সুশৃঙ্খলভাবে বাকী বিষয়গুলোর পারস্পরিক গ্রহণযোগ্য সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করে যাবে উভয়পক্ষ; যাতে করে যৌথভাবে সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি ও শান্তি বজায় রাখা যায়।’

প্যাংগং থেকে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহারের আগে, উভয়পক্ষের দাবি করা অঞ্চলটির উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলে উভয় পক্ষের সেনারা মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছিল। সেনা মোতায়েন বাড়ানোর কারণে ভারতের লাদাখ ও চীনের আকসাই চীনে দেখা দিয়েছিল দ্বন্দ্ব শুরুর শঙ্কা।
কয়েক দশক ধরে চীন ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে বিরোধ চলছে। ১৯৬২ সালে এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধও হয়েছিল। উভয় দেশের মধ্যে ৩ হাজার ৪৪০ কিলোমিটার সীমান্ত নিয়ে বিরোধ আছে। এসব সীমানা আন্তর্জাতিক সীমান্তরেখা দিয়ে বিভাজিত নয়।
গত জানুয়ারিতেও সিকিম রাজ্যের সীমান্তে দুই দেশের সেনারা দ্বন্দ্বে জড়ালে উভয়পক্ষের কিছু সেনা আহত হয়। এর আগে গত জুনে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষে ভারতের ২০ ও চীনের চার সেনা নিহত হয়েছিল। তারপর থেকে উত্তেজনা বাড়তে শুরু করে।
এএস