ভূমধ্যসাগরে জাহাজে হামলার জন্য দায়ী ইসরায়েল: ইরান

ভূমধ্যসাগরে ইরানি কন্টেইনার জাহাজে বিস্ফোরক ছোড়ার ঘটনায় ইসরায়েলকে দায়ী করেছে ইরানের তদন্তকারী সংস্থা। ইরান সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এই অন্তর্ঘাতী আঘাতের জবাব দেওয়া হবে।
তবে এই অভিযোগ সত্য কিনা জানতে চেয়ে ইসরায়েল সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি।
শুক্রবার ভূমধ্যসাগরে ‘শাহরি কর্ড’ নামের একটি ইরানি কন্টেইনার জাহাজ লক্ষ্য করে বিস্ফোরক ছোড়া হয়। এতে আগুন ধরে যায় জাহাজটিতে।
তবে খুব দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন জাহাজের ক্রুরা। হামলায় খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়নি শাহরি কর্ডের, কোনো ক্রু আহতও হননি।
বিস্ফোরক ছোড়ার জন্য কারা দায়ী- তা তদন্ত করতে একটি কমিটি গঠন করেছে ইরান সরকার। রোববার ওই কমিটির এক সদস্য ইরানের আধা সরকারি সংবাদসংস্থা নূরনিউজকে বলেন, ‘জাহাজটির ভৌগলিক অবস্থান এবং হামলার ধরন গভীর ভাবে পর্যালোচনা করে আমরা এই সিদ্ধান্তে এসেছি, ইহুদিশাসিত এলাকা (ইসরায়েল) থেকেই এই সন্ত্রাসী হামলা পরিচালিত হয়েছে।’
এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইসরায়েল সরকারের মতামত জানতে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গান্টজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে শনিবার বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘ভূমধ্যসাগরীয় এলাকায় ভূমি-জল এবং আকাশপথে যাবতীয় সামরিক কর্মকাণ্ড আগে থেকেই স্থগিত রেখেছে ইসরায়েল সরকার। তবে এই হামলার জন্য ইসরায়েল দায়ী কিনা সে বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সায়িদ খাতিবজাদেহ এ বিষয়ে বলেন, ‘এই হামলা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আমাদের তদন্ত চলছে। (এই হামলার জন্য) কারা দায়ী তা সুনির্দিষ্টিভাবে শনাক্ত করাই তদন্তের মূল উদ্দেশ্য।’
ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত জাহাজ নির্মাণকারী কোম্পানি আইআরআইএসএল ক্ষতিগ্রস্ত কন্টেইনার জাহাজ শাহরি কর্ড জাহাজটির মালিক। শনিবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইআরআইএসএল পৃথক দু’টি বিবৃতিতে জানিয়েছে, তদন্ত শেষ হওয়ার পর এই সন্ত্রাসী হামলার বিচার চেয়ে আইনানুগ পথে এগোবে ইরানের সরকার।
দু’সপ্তাহ আগে ওমান উপসাগরে এরকম এক হামলা হয়েছিল ইসরায়েলি জাহাজ এমভি হেলিয়াস রেতে। গোলার আঘাতে হেলিয়াস রের বাইরের কাঠামোর দু’পাশে ছিদ্র হয়ে গিয়েছিল। ওই হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করেছিল ইসরায়েল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ইরানকে এই হামলার জন্য জবাবদিহি করতে হবে।
তবে শুক্রবারের হামলার বিষয়ে ইসরায়েলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট একটি সংস্থার সূত্র জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এই নিয়ে চতুর্থবারের মতো হামলার শিকার হলো ইরানের জাহাজ। এর আগে লোহিত সাগরে এ রকম হামলায় তিনটি ইরানি জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স
এসএমডব্লিউ