সু চিকে ৫ লাখ ডলার ঘুষের দাবি

সেনাবাহিনীর শাসকদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মিয়ানমারের নির্মাণখাতের প্রভাবশালী এক টাইকুন দাবি করেছেন, সরকারি সুবিধা পেতে তিনি দেশটির ক্ষমতাচ্যুত গৃহবন্দি নেত্রী অং সান সু চিকে পাঁচ লাখের বেশি ডলার ঘুষ দিয়েছিলেন। দেশটির সরকারি টেলিভিশনে এই ব্যবসায়ীর এমন দাবি নিয়ে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর হইচই শুরু হয়েছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে গৃহবন্দি থাকা অং সান সু চির বিরুদ্ধে দুর্নীতির আরও গুরুতর অভিযোগ গঠনে সেনাবাহিনীকে পথ তৈরি করে দিতে পারে ব্যবসায়ী মং ওয়াইকের এই দাবি। অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটিতে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতাদের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে লাখ লাখ মানুষের জনপ্রিয় আন্দোলন দমনে যখন নিরাপত্তা বাহিনী মারাত্মক বলপ্রয়োগ করছে; তখন এমন অভিযোগ আনলেন সেনাশাসকদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ওই ব্যবসায়ী।
দেশটির সামরিক বাহিনী ইতোমধ্যে অং সান সু চিকে দুর্নীতিতে জড়িত করার চেষ্টা করছে। তাদের অভিযোগ, ক্ষমতায় থাকাকালীন একজন রাজনৈতিক মিত্র অং সান সু চিকে ৬ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের সোনার বার দিয়েছিলেন। সু চি এবং দেশটির ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট উইন্ট মিন্টের বিরুদ্ধে বিশৃঙ্খলায় উসকানি, অবৈধভাবে ওয়াকি-টকি আমদানি এবং ব্যবহার ও করোনা মহামারির সময় জনসমাগমের বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
যদিও অং সান সু চির আইনজীবী খিন মং জ্য মিয়ানমারের এই নেত্রীর বিরুদ্ধে আনা সব ধরনের অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
সু চির বিরুদ্ধে সর্বশেষ ঘুষের অভিযোগ আনা মং ওয়াইক অতীতে মাদক পাচারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, তিনি ব্যবসায়িক সহায়তা পাওয়ার জন্য সু চির সরকারের মন্ত্রীদের নগদ অর্থ দিয়েছিলেন।
মিয়ানমারের এই ব্যবসায়ী বলেন, ২০১৮ সালে সু চির মায়ের নামে করা একটি দাতব্য সংস্থাকে এক লাখ ডলার দেন তিনি। এছাড়া পরের বছর তাকে আরও দেড় লাখ ডলার দেন। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে আরও ৫০ হাজার এবং এপ্রিলে আড়াই লাখ ডলার সু চিকে দেন। এই অর্থ কেন সু চিকে দিয়েছিলেন সেবিষয়ে নির্দিষ্ট কোনও কারণ জানাননি মং।
এদিকে, বুধবারও মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রান্তে সামরিক জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। মার্কিন বার্তাসংস্থা এসোসিয়েট প্রেস (এপি) বলছে, বুধবার বিক্ষোভকারীরা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে মোলোতোভ ককটেল ও গুলতি ছুড়েছেন।
দেশটির নিরাপত্তাবাহিনীর সহিংসতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের এই পাল্টা প্রতিরোধকে নজিরবিহীন বলছেন অনেকে। দেশটির একটি সংগঠন বলছে, অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত নিরাপত্তাবাহিনীর সহিংসতায় ২০০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।
এসএস