ইউক্রেনে বাঁধ বিস্ফোরণের জন্য দায়ী পশ্চিমারা: রাশিয়া
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ দোনেৎস্কের বন্দরশহর কাখোভকা শহরের বাঁধে বিস্ফোরণের ঘটনাকে ‘অচিন্তনীয় অপরাধ’ উল্লেখ করে এই ঘটনার জন্য ইউক্রেন ও তার পশ্চিমা মিত্রদের দায়ী করেছে রাশিয়া।
বুধবার জাতিসংঘের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে জাতিসংঘের রুশ প্রতিনিধি ভাসিলি নেবেনজিয়া অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় মিত্রদের সামরিক সহায়তা ও পরামর্শ মেনেই পরিকল্পিতভাবে কাখোভকা বাঁধে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রকাশিত কয়েকটি প্রতিবেদনকে নথি হিসেবে উপস্থাপন করেন নেবেনজিয়া। সেগুলোতে লেখা ছিল—যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া হিমার্স রকেট ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে কাখোভা বাঁধে হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন।
নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ভাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, ‘পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে আশকারা ও অস্ত্র সহায়তা নিয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলা চালাচ্ছে ইউক্রেন। বাঁধে বিস্ফোরণও সেসবের মধ্যে একটি।’
কাখোভকা শহরটি নিপার নদীর তীরে অবস্থিত। রুশ বাহিনী ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর এই শহরটি বর্তমানে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে আছে। গত ৬ জুন যে বাঁধটির একাংশ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, সেটি কাখোভকা বাঁধ নামে পরিচিত।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বিশাল এই বাঁধটি বিপর্যস্ত হওয়ার ফলে একদিকে কাখোভকাসহ নিপার নদীর দুই তীরের বিভিন্ন শহরে বন্যার ঝুঁকিতে পড়েছেন অন্তত ৪২ হাজার মানুষ; অন্যদিকে, কৃষ্ণসাগরের তীরবর্তী ক্রিমিয়া উপদ্বীপের পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় গুরুতর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ক্রিমিয়া উপদ্বীপে সুপেয় পানির প্রধান উৎস নর্থ ক্রিমিয়া ক্যানেল নামের একটি খাল। বাঁধের মাধ্যমে নিপার নদীর পানি এই খালে আনা হয়— তারপর তা সরবরাহ করা হয়। ২০১৪ সালের গণভোটে ক্রিমিয়া ইউক্রেনের পরিবর্তে রাশিয়ায় অন্তর্ভূক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তারপর নদী থেকে খালে পানি যাওয়ার পথ বন্ধ করে দিয়েছিল কিয়েভ। গত বছর রুশ বাহিনী ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর কাখোভকা শহরটি রাশিয়ার নিয়ন্ত্রেণে এলে সেই খালটি আবার খুলে দেয় রুশ সেনারা।
বাঁধে বিস্ফোরণের পর থকে নর্থ ক্রিমিয়া খালে পানির প্রবাহ কমে গেছে উল্লেখ করে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে নেবেনজিয়া বলেন, ‘ক্রিমিয়ার জনগণের ওপর প্রতিশোধ নিতে পরিকল্পিতভাবে বাঁধে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে ইউাক্রেন এবং তারপর যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা মিত্রদের সহায়তায় গুজব রটাচ্ছে— রুশ বাহিনী এই হামলা চালিয়েছে। এর আগে ঝাপোরিজ্জিয়া পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে হামলা করেও একই কাজ করেছিল ইউক্রেন।’
‘কিয়েভে ক্ষমতাসীনরা এখন সম্পূর্ণভাবে সন্ত্রাসী রণকৌশলের ওপর নির্ভর করছে এবং এক্ষেত্রে তারা শিক্ষক ও সহায়তাকারী হিসেবে পেয়েছে পশ্চিমাদের। নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনে হামলা ছিল তাদের এই সন্ত্রাসী হামলার প্রথম পদক্ষেপ।’
সূত্র : আরটি
এসএমডব্লিউ