পাকিস্তানের আরও কাছে বিপর্যয়, করাচিতে ব্যাপক সতর্কতা
আরব সাগরে সৃষ্ট অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ পাকিস্তানের আরও কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। ঘূর্ণিঝড়টি ইতোমধ্যেই ‘অতি মারাত্মক ঘূর্ণিঝড়ে’ পরিণত হয়েছে এবং পাকিস্তানের উপকূল থেকে এটি বর্তমানে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।
এই পরিস্থিতিতে উপকূলীয় শহর করাচিতে ব্যাপক সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সোমবার (১২ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিপর্যয় ‘অত্যন্ত মারাত্মক ঘূর্ণিঝড়ে’ রূপ নিয়েছে এবং উপকূলীয় শহর করাচি থেকে এটি বর্তমানে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে বলে পাকিস্তান আবহাওয়া বিভাগ (পিএমডি) জানিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে জনগণকে উন্মুক্ত সমুদ্রে যেতে বাধা দেওয়ার জন্য সোমবার করাচির সিভিউ রোডটি অবরুদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
পিএমডির জারি করা নতুন বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়টি ‘গত ১২ ঘণ্টায় আরও উত্তর দিকে সরে গেছে’ এবং বর্তমানে এটি করাচি থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দক্ষিণে, থাটা থেকে ৫৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং ওরমারা থেকে ৭১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছে।
আবহাওয়া বিভাগ বলেছে, আগামী ১৪ জুন সকাল পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টি সম্ভবত আরও উত্তর দিকে সরতে থাকবে। ঘূর্ণিঝড়টি তারপর উত্তর-পূর্ব দিকে মোড় নেবে এবং আগামী ১৫ জুন দক্ষিণ-পূর্ব সিন্ধুর কেটি বন্দর এবং ভারতীয় গুজরাট উপকূলের ওপর দিয়ে ‘অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড়’ হিসাবে অতিক্রম করবে।
উপকূলীয় এলাকায় বসবাসরত নাগরিকদের সতর্ক করে দেওয়া বার্তায় পিএমডি বলেছে, থাটা, সুজাওয়াল, বাদিন, থারপাকার এবং উমেরকোট জেলায় আগামী ১৩-১৭ জুন পর্যন্ত ‘বিস্তৃত বাতাস-ধুলো/বজ্রঝড় বৃষ্টির সাথে অতিভারী বর্ষণ এবং এর পাশাপাশি ঘণ্টায় ৮০-১০০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বেয়ে যেতে পারে’।
এছাড়া ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে আছড়ে পড়ার সময় ৩ থেকে সাড়ে ৩ মিটার উচু ঢেউ দেখা দিতে পারে। এই পরিস্থিতিতে আগামী ১৭ জুন পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সাগরে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে পিএমডি।
এদিকে করাচির দক্ষিণের সিনিয়র পুলিশ সুপার (এসএসপি) সৈয়দ আসাদ রেজা বলেছেন, ‘সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার ওপর কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই’ তবে সাগরে সাঁতার কাটা, মাছ ধরা ইত্যাদি বন্ধ রাখার জন্য উন্মুক্ত সমুদ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আসন্ন ঘূর্ণিঝড়ের পরিপ্রেক্ষিতে মানুষকে উন্মুক্ত সাগরে প্রবেশ করা থেকে বিরত রাখতে জেলা দক্ষিণ পুলিশ বিস্তৃত নিরাপত্তা পরিকল্পনা জারি করেছে। জননিরাপত্তার জন্য চলাচল নিয়ন্ত্রণে আমরা বিভিন্ন রাস্তায় ১৫টিরও বেশি চেকপয়েন্ট স্থাপন করেছি।’
এসএসপি আসাদ রাজা আরও বলেছেন, ‘দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে সাহায্য করার জন্য’ সৈকতে জরুরি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়া পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশ থেকে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়ার কাজও শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলী শাহ জানিয়েছেন, সোমবারের মধ্যে এই ঘুর্ণিঝড় মোকাবিলার যাবতীয় পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণের কাজ শেষ করবে তার সরকার।
টিএম