জনসনের টিকা ব্যবহারে স্থগিতাদেশ তুলে নিল যুক্তরাষ্ট্র

গণটিকাদান কর্মসূচিতে জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা ব্যবহারে স্থগিতাদেশ তুলে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি স্বাস্থ্য সংস্থা সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)। সিডিসির পরিচালক রচেল ওয়ালেনস্কি বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
শুক্রবার রয়টার্সকে সিডিসিকে সিডিসি পরিচালক বলেন, ‘আমরা জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা প্রয়োগের ওপর স্থগিতাদেশ আর দীর্ঘায়িত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন থেকে দেশে গণটিকাদান কর্মসূচিতে এই টিকা ব্যবহারে কোনো বাঁধা নেই।’
সম্প্রতি জনসনের এক ডোজের করোনা টিকা নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে ৮ জন রক্ত জমাট বাঁধা ও প্ল্যাটিলেট (একপ্রকার রক্ত কণিকা) কমে যাওয়া সংক্রান্ত সমস্যায় পড়েন। তাদের মধ্যে তিনজন ইতোমধ্যে মারা গেছেন। আক্রান্তদের সবাই নারী এবং তাদের বয়স ৩০ থেকে ৩৯ এর মধ্যে।
এর জেরে গত ১৩ এপ্রিল জনসন অ্যান্ড জনসনের করোনা টিকার ব্যবহারে সাময়িক স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সিডিসি এবং এফডিএ (ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন)। পাশাপাশি বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটিও গঠন করে সংস্থা দু’টি।
শুক্রবারে সিডিসি বৈঠকে সেই কমিটি প্রতিবেদন পেশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ১০ লক্ষে একজন টিকা গ্রহণকারী এই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত জনসন অ্যান্ড জনসনের এক ডোজের করোনা টিকা নিয়েছেন ৬৮ লাখ মানুষ।
রচেল ওয়ালেনস্কি বলেন, ‘বিশেষজ্ঞ কমিটি বলেছে, রক্তজমাট বাঁধার সঙ্গে এই টিকার যোগাযোগ খুবই দূরের এবং এই টিকা ব্যাবহারে ঝুঁকির চেয়ে উপকার অনেক বেশি। বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই এই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
আগামী শনিবার থেকে গণটিকাদান কর্মসূচিতে ফের এই টিকার ব্যবহার শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বাজারে সহজলভ্য অন্যান্য টিকার সঙ্গে জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার পার্থক্য হলো— এটি এক ডোজের করোনা টিকা।অন্যান্য টিকার বেলায় যেখানে দুই ডোজ প্রয়োজন হয়, সেখানে জনসনের এক ডোজের টিকাতে মানবদেহে করোনা প্রতিরোধী প্রোটিন গড়ে ওঠে।
অন্যান্য টিকার তুলনায় এই টিকা সংরক্ষণ করাও সহজ, সাধারণ রেফ্রিজারেটরেই সংরক্ষণ ও পরিবহন করা যায় জনসনের টিকার ডোজ।
ফাইজার এবং মডার্নার পরে আমেরিকায় তৃতীয় করোনা প্রতিষেধক হিসেবে ফেব্রুয়ারির শেষে ছাড়পত্র পেয়েছিল জনসনের টিকা। সম্প্রতি ভারতে এই টিকা রফতানির বিষয়েও দেশটির সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে জনসনের কর্মকর্তাদের।
সূত্র: রয়টার্স
এসএমডব্লিউ