স্পেনে পৌঁছানোর চেষ্টা, সাগরে নৌকা ভেঙে ডুবে গেলেন ৫০ অভিবাসী

পশ্চিম আফ্রিকা থেকে স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে পারাপারের চেষ্টার সময় নৌকা ভেঙে কমপক্ষে ৫০ জন অভিবাসী সাগরে ডুবে গেছেন। বুধবার মরক্কো উপকূলের কাছে অভিবাসীদের বহনকারী নৌকা ভেঙে অভিবাসীদের ডুবে যাওয়ার এই ঘটনা ঘটেছে। ডুবে যাওয়া অভিবাসীদের বেশিরভাগই পাকিস্তানি নাগরিক।
বৃহস্পতিবার অভিবাসী অধিকার গ্রুপ ওয়াকিং বর্ডারসের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মরক্কোর কর্তৃপক্ষ বুধবার একটি নৌকা থেকে ৩৬ জনকে উদ্ধার করেছে। অভিবাসীদের বহনকারী এই নৌকা গত ২ জানুয়ারি মৌরিতানিয়া থেকে স্পেনের ক্যানারি দ্বীপের উদ্দেশে যাত্রা করেছিল।
নৌকাটিতে ৬৬ পাকিস্তানি নাগরিকসহ মোট ৮৬ জন অভিবাসী ছিলেন বলে জানিয়েছে ওয়াকিং বর্ডারস। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হেলেনা মালিনো বলেছেন, যারা সাগরে ডুবে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে ৪৪ জনই পাকিস্তানের।
তিনি বলেন, ‘‘তারা সাগর পারাপারে যন্ত্রণাদায়ক ১৩ দিন কাটিয়েছেন। কেউ তাদের উদ্ধার করতে আসেননি।’’
অভিবাসীদের বহনকারী নিখোঁজ একটি নৌকার বিষয়ে কোনও বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে সতর্কতা পেয়েছেন কি না, জানতে চাইলে স্পেনের মেরিটাইম রেসকিউ সার্ভিস বলেছে, তারা গত ১০ জানুয়ারি মৌরিতানিয়ার নোয়াকচট ছেড়ে আসা একটি জাহাজ সম্পর্কে জানতে পেরেছিল। তবে সেই জাহাজটি সংকটের মধ্যে পড়েছিল বলে ধারণা করা হলেও ভেঙে যাওয়া নৌকাটিই সেটি কি না তা নিশ্চিত করতে পারেনি স্পেনের মেরিটাইম কর্তৃপক্ষ।
স্পেনের মেরিটাইম রেসকিউ সার্ভিস বলেছে, তারা বিমান ব্যবহার করে সাগরে তল্লাশি চালালেও দুর্ঘটনার কবলে পড়া অভিবাসীদের নৌকা শনাক্ত করতে পারেনি। তবে কাছাকাছি এলাকায় থাকা জাহাজগুলোকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল।
ওয়াকিং বর্ডারস বলেছে, ছয় দিন আগে নিখোঁজ নৌকা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সব দেশের কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছিল। সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়া অভিবাসীদের জরুরি ফোন সংযোগ সরবরাহকারী বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) অ্যালার্ম ফোন বলেছে, গত ১২ জানুয়ারি স্পেনের সামুদ্রিক উদ্ধার পরিষেবা কর্তৃপক্ষকে দুর্দশাগ্রস্ত একটি নৌকা সম্পর্কে সতর্ক করেছিল তারা।
ওয়াকিং বর্ডারসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে স্পেনে পৌঁছানোর চেষ্টা করে রেকর্ড ১০ হাজার ৪৫৭ জন অভিবাসী সাগরে প্রাণ হারিয়েছেন। সাগরে প্রাণ হারানোর মানুষের এই সংখ্যা দৈনিক গড়ে প্রায় ৩০ জন। যাদের বেশিরভাগই মৌরিতানিয়া এবং সেনেগালের মতো পশ্চিম আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে আটলান্টিক মহাসাগর পেরিয়ে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছানোর চেষ্টার সময় মারা গেছেন।
সূত্র: রয়টার্স।
এসএস