শুভেন্দুর কাছে কান্না করা সেই নারীকে ‘বাংলাদেশি’ দাবি

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরে গত ২২ এপ্রিল ভয়াবহ সশস্ত্র হামলায় ২৬ জন নিহত হন। যারমধ্যে ছিলেন বিতান অধিকারী নামে এক ব্যক্তি। এরপর কলকাতা বিমানবন্দরে কফিনে করে তার মরদেহ নিয়ে আসা হয়। সেখানে দেখা যায় কলকাতার বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কথা বলার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন এই ব্যক্তির স্ত্রী। তার নাম সুহিনী অধিকারী বলে জানা গেছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, শুভেন্দু তার সন্তানকে কোলে নিয়ে বলছেন, ‘ওর দায়িত্ব আমার’।
তবে এ ঘটনার তিনদিন পর বিষয়টি অন্যদিকে মোড় নিয়েছে। নিহত বিতান অধিকারীর ভাই বিভু অধিকারী স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছেন, সুহিনী বাংলাদেশি। তার মা ভারতীয় রায়-ও বাংলাদেশি। তিনি জানান, দুই বছর আগে সুহিনীর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা হয়। যেটি এখনো চলমান রয়েছে। তিনি আরও জানান, সুহিনীর মা ভারতী রায় বাংলাদেশে চলে গেছেন।
বিভু বলেন, “সুহিনীর আলাদা দুটি জন্মনিবন্ধন রয়েছে। তিনি আসলে বাংলাদেশি। পরে তিনি ভারতীয় ভোটার কার্ড, আধার কার্ড অন্যান্য কাগজপত্র নেন। কিন্তু পরবর্তীতে পাওয়া যায় এগুলো ভুয়া।
তিনি আরও বলেন, ‘সুহিনী ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতে চলে আসেন। কারণ তার ভারতীয় পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। ভারতে এসে তিনি সেখানে আরও সময় অবস্থান করার আবেদন জানান। কিন্তু তার এ আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়। এখন বিষয়টি কলকাতা হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চে প্রক্রিয়াধীন আছে।”
বিতানের ভাই দাবি করেন, বিতান ও সুহিনী ২০২৩ সাল থেকে আলাদা একটি বাড়িতে থাকতেন। যেটিতে বর্তমানে ছেলেকে নিয়ে তিনি আছেন। এই বাড়িটি ভুয়া কাগজ দিয়ে সুহিনীর মা কিনেছিলেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। যা পরবর্তীতে সুহিনীকে দেন তিনি।
গত বুধবার যখন বিতানের মরদেহ কলকাতা বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হয় তখন সেখানে উপস্থিত হন শুভেন্দু। শুভেন্দুকে বিতানের স্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, বিতান বিজেপির সমর্থক ছিলেন এবং তিনি তার কাছে বিচার চান। ভিডিওতে এ নারীকে আরও বলতে শোনা যায়, বিতানকে জিজ্ঞেস করা হয় তিনি কালেমা জানেন কি না। এরপরই তাকে গুলি করা হয়।
বিতানের ভাই অভিযোগ করেছেন, সুহিনী এখন ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য শুভেন্দুর মতো বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করছেন। এদিকে সুহিনী এ ব্যাপারে এখনো কোনো কথা বলেননি।
উল্লেখযোগ্য যে, পশ্চিমবঙ্গে কাউকে হেনস্তা করতে তাকে অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি হিসেবে আখ্যায়িত করার ইতিহাস রয়েছে।
সূত্র: দ্য উইক
এমটিআই