‘লাভ জিহাদ’ নিয়ে যা ভাবছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী

ভারতের হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করছে যে এক শ্রেণির মুসলমান যুবক হিন্দু নারীদের কাছে প্রেমের অভিনয় করে এবং ধর্ম পরিবর্তন করিয়ে বিয়ে করে। তাদের কথায়, লাভ বা প্রেমের মাধ্যমে জিহাদ করা হচ্ছে এভাবে।
এ লাভ জিহাদ ঠেকাতে বিজেপিশাসিত একাধিক রাজ্যে আইন আনা হয়েছে। কিন্তু প্রায় সবক্ষেত্রেই সেই আইনের উদ্দেশ্য ছিল যাতে ধর্মান্তকরণের উদ্দেশ্যে একজন মুসলিম পুরুষ কোনো হিন্দু নারীকে বিয়ে না করতে পারেন। কিন্তু লাভ জিহাদের সেই সংজ্ঞাই কার্যত বদলে দিলেন বিজেপিশাসিত আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা৷
শনিবার তিনি দাবি করেছেন, হিন্দু হোন বা মুসলিম, কোনো পুরুষই যাতে ছলনার আশ্রয় নিয়ে বা তথ্য গোপন করে বিয়ের নামে কোনো নারীর সাথে প্রতারণা না করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে কড়া আইন আনবে আসাম সরকার।
হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, একজন হিন্দু পুরুষও যদি প্রতারণা করে কোনো নারীকে বিয়ে করে, আমার মতে সেটাও জিহাদ।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, ধর্ম বা অন্য কোনো তথ্য গোপন করে বিয়ের নামে প্রতারণার প্রবণতা বন্ধ হওয়া উচিত। তিনি বলেন, কোনো হিন্দু পুরুষেরও কোনো হিন্দু নারীকে বিয়ের নামে ঠকানো উচিত নয়। এ কারণেই তিনি নির্দিষ্টভাবে ‘লাভ জিহাদ’ জাতীয় কোনো শব্দবন্ধেও বিশ্বাস করেন না বলে জানিয়েছেন।
হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, আমরা নির্দিষ্টভাবে লাভ জিহাদ বলে কোনো বিশেষ শব্দবন্ধকে ব্যবহার করার পক্ষপাতী নই। কারণ আমরা মনে করি একজন হিন্দুরও আরেকজন হিন্দুকে ঠকানোর অধিকার নেই। একজন মুসলিম পুরুষ একজন হিন্দু নারীকে ঠকিয়ে বিয়ে করলেই সেটা লাভ জিহাদ নয়। আমার মতে কোনো হিন্দু পুরুষও যদি তথ্য গোপন করে বা কোনো ছলনার আশ্রয় নিয়ে কোনো হিন্দু নারীকে বিয়ে করে, তাহলে সেটাও জিহাদ। এই কারণেই এই জিহাদ শব্দটিতে আমি বিশ্বাস করি না। বিয়ের নামে যেকোনো প্রতারণা যাতে বন্ধ হয়, তা নিশ্চিত করতেই কড়া আইন আনা হবে।
তবে আসামের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, প্রথমে রাজ্যে গো রক্ষা আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এরপর সর্বাধিক দুই সন্তান সংক্রান্ত বিধি বলবৎ করা হবে এবং তারপরই বিয়ের নামে প্রতারণা আটকাতে আইন আনতে উদ্যোগী হবে সরকার। নতুন এই আইন হিন্দু, মুসলিম সবার ওপরেই সমানভাবে প্রযোজ্য হবে বলেও দাবি তার।
এনএফ