আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার ‘নির্বোধ সিদ্ধান্ত’: ব্লেয়ার

আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের তীব্র সমালোচনা করেছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশটি থেকে সেনা প্রত্যাহারকে তিনি ‘বিপর্যয়কর, বিপজ্জনক এবং অপ্রয়োজনীয়’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। গত সপ্তাহে তালেবানের হাতে কাবুলের পতনের পর দেওয়া প্রথম কোনো বিবৃতিতে সাবেক এই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
রোববার (২২ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। বিবৃতিতে টনি ব্লেয়ার বলেন, ‘চিরস্থায়ী যুদ্ধের অবসানের’ মতো একটি নির্বোধ স্লোগান তুলে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষিতে আফগানিস্তানে হামলা করে যুক্তরাষ্ট্র। সেসময় মার্কিনিদের সঙ্গে টেনি ব্লেয়ারের নেতৃত্বেই আফগান যুদ্ধে যোগ দেয় যুক্তরাজ্য। টনি ব্লেয়ার সেসময় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সিদ্ধান্তের প্রতি ইঙ্গিত করে টনি ব্লেয়ার বলেন, ‘আমাদের এটা করার কোনো প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তটি আমরাই গ্রহণ করেছি। ‘চিরস্থায়ী যুদ্ধের অবসানের’ মতো একটি নির্বোধ রাজনৈতিক স্লোগান তুলে এটা করা হয়েছে।’
তার ভাষায়, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাসহ সকল বিদেশি সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ায় জিহাদি গ্রুপগুলো এখন ‘আনন্দ করছে’। সংশ্লিষ্ট সবাইকে আফগান ভূখণ্ড থেকে নিরাপদে বের করে আনার আগপর্যন্ত দেশটিতে ব্রিটেনের অবস্থানের ‘নৈতিক বাধ্যবাধকতা’ রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ব্লেয়ার বলছেন, ঝুঁকির মুখে থাকা মানুষদেরকে আফগানিস্তান থেকে বের করে আনার ক্ষেত্রে আমাদের কৃপণতা দেখালে চলবে না। বরং মানবতা ও দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে ঝুঁকিপূর্ণ সবাইকে নিরাপদে বের করে আনতে হবে।
অবশ্য আফগানিস্তানে নিজেদের ভুলের কথাও স্বীকার করেন যুক্তরাজ্যের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু ব্লেয়ারের মতে, আফগানিস্তানে হওয়া ভুলের বিপরীতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেগুলোও ভুল। সাবেক এই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দাবি, গত ২০ বছরে আফগানিস্তানে সত্যিকারের যেসব অর্জন রয়েছে, বর্তমানে তা হারাতে বসেছে।
টনি ব্লেয়ারের মতে, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাসহ সকল বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের কারণে রাশিয়া, চীন ও ইরান মূলত সুবিধা পাবে।
টিএম