পাঞ্জশিরে প্রতিরোধ সংগ্রাম চলবে : এনআরএফ

পাঞ্জশির পুরোপুরি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার যে দাবি তালেবান বাহিনী করছে, তাকে ভিত্তিহীন উল্লেখ করে এনআরএফএ (ন্যাশনাল রেসিস্ট্যান্স ফ্রন্ট অব আফগানিস্তান) জানিয়েছে, তাদের প্রতিরোধ সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।
বিবিসি অনলাইনকে এনআরএফের মুখপাত্র আলী মাইসাম বলেছেন, ‘পাঞ্জশির দখল করতে পেরেছে বলে যে সংবাদ তালেবান প্রচার করছে তা ভিত্তিহীন। পাঞ্জশির পরাজিত হয়নি এবং আমি তালেবানদের এই দাবি বাতিল করছি।’
রোববার তালেবান বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন এনআরএফের প্রধান মুখপাত্র ফাহিম দাশতি। তারপর থেকে এই সামরিক জোটের নতুন মুখপাত্রের দায়িত্বে আছেন আলী মাইসাম।
আফগানিস্তানের ৩৪ টি প্রদেশের মধ্যে ৩৩ টির দখল নেওয়ার পর গত ১৫ আগস্ট কাবুলে প্রবেশ করতে সক্ষম হয় তালেবান বাহিনী। একমাত্র যে প্রদেশটি তালেবান দখলের বাইরে ছিল- তার নাম পাঞ্জশির।
আফগানিস্তানের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় এলাকার ক্ষুদ্র এই পার্বত্য প্রদেশটির দখল নিতে গত প্রায় এক সপ্তাহ আগে পাঞ্জশিরে সামরিক অভিযান শুরু করে তালেবান বাহিনী।
অভিযান শুরুর আগেই তালেবান বাহিনীকে বৈঠকে বসার আহ্বান জানিয়েছিল এনআরএফ, কয়েকবার তার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর কোনো বৈঠক হয়নি।
পাঞ্জশিরে তালেবান-এনআরএফএ সংঘাত শুরুর পর দুপক্ষেই বিপুলসংখ্যক প্রাণহানি হয়েছে বলে জানিয়েছে আফগানিস্তানের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।
অবশেষে, অভিযানের প্রায় ৭ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর সোমবার তালেবান মুখপাত্র ঘোষণা করেন, পাঞ্জশির এখন তালেবান বাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে।
আফগানিস্তানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যে এ বিষয়ক কিছু ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে দেখা গেছে, তালেবান বাহিনী পাঞ্জশিরের প্রাদেশিক গভর্নরের কার্যালয়ের সামনের ফটকে দাঁড়িয়ে আছেন।
তবে বিবিসিকে মাইসাম জানিয়েছেন, কৌশলগত কারণে এনআরএফ যোদ্ধারা আত্মগোপনে আছেন এবং তারা যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে নিজেদের অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করা এক সংক্ষিপ্ত বার্তায় এনআরএফের পক্ষ থেকে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘যতদিন আফগানিস্তানে ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতা ফিরে না আসবে, ততদিন আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।’
পাঞ্জশির বরাবরই তার স্বাধীনচেতা মনোভাবের জন্য বিখ্যাত। আশির দশকে আফগানিস্তানে যখন সোভিয়েত আগ্রাসন শুরু হয়, সেসময় যেমন পাঞ্জশিরকে দখলে আনা যায়নি, তেমনি ১৯৯৬ সালে যখন তালেবান প্রথম দফায় আফগানিস্তানে সরকার গঠন করল- তখনও অপরাজিত ছিল পাঞ্জশির।
এর প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হয় প্রদেশটির সাবেক নেতা আহমদ শাহ মাসুদের সাহসী ও কুশলী নেতৃত্বকে। নিজ নেতৃত্বগুণের জন্য যিনি পরিচিতি পেয়েছিলেন ‘পাঞ্জশিরের সিংহ’ নামে।
২০০১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর গুপ্তহত্যার শিকার হন আহমদ শাহ মাসুদ। তার ছেলে আহমাদ মাসুদ বর্তমানে এনআরএফের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
সূত্র : বিবিসি
এসএমডব্লিউ