মন্ত্রিত্ব পেতে নারীদের আরও অপেক্ষায় রাখতে চায় তালেবান

আফগানিস্তানের মন্ত্রিসভায় নারীদের অন্তর্ভুক্ত করতে চায় তালেবান, তবে সেটি এখনই নয়। মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) আফগান ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীটির মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ এই তথ্য জানিয়েছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফোর্বস।
তালেবান বলছে, তারা চায় নারীরা মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে মানুষের সেবা করার সুযোগ লাভ করুক। কিন্তু নারীদের চাকরিতে যোগদান এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফিরে যাওয়ার মতো সেটিও এখনই সম্ভব নয়। ফোর্বস বলছে, নারী ও মেয়েদের স্বাধীনতার ব্যাপারে কাবুলের নতুন সরকার বারবার অঙ্গীকার করলেও বাস্তবে সেটি থেকে আফগান নারীরা বঞ্চিত হচ্ছেন।

মঙ্গলবার তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ জানান, আফগানিস্তানের নতুন মন্ত্রিসভায় নারীদের মতো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি এবং তালেবানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়; এমন ব্যক্তিদেরকেও অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তবে এক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট করে তিনি কোনো সময় উল্লেখ করেননি।
এর আগে মেয়ে শিক্ষার্থীদেরকে শিক্ষা থেকে দূরে রাখার অভিযোগটি গত শনিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন’র কাছে অস্বীকার করেন মুজাহিদ। যদিও গত শনিবার থেকে আফগানিস্তানে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং সেখানে কেবল ছেলে শিক্ষার্থী ও পুরুষ শিক্ষকদেরকেই বিদ্যালয়ে আসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
তবে মেয়েদের শিক্ষার বিষয়ে মঙ্গলবার তালেবানের এই মুখপাত্র বলেন, আমরা এই বিষয়টি চূড়ান্ত করছি... যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মেয়েরা স্কুলে ফিরতে পারবে। কিন্তু গত সপ্তাহে বন্ধ হয়ে যাওয়া আফগানিস্তানের নারীকল্যাণবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেননি জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ।
চলতি মাসের শুরুর দিকে তালেবান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার ঘোষণা দেয়। আফগান সব সম্প্রদায় ও গোত্রের প্রতিনিধিত্বমূলক প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও প্রধান প্রধান মন্ত্রণালয়গুলোতে তালেবানের কট্টরপন্থী এবং অনুগতদেরই নিয়োগ দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০ বছর পর গত ১৫ আগস্ট কাবুল দখল করে তালেবান। এরপর থেকেই বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছিলেন যে, কট্টরপন্থি তালেবানের শাসনাধীনে দেশটির নারীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে পারে।

তবে কাবুল দখলের পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে তালেবান জানিয়েছিল যে, ইসলামি রীতি-নীতি অনুযায়ী নারীদের অধিকার রক্ষা ও বাস্তবায়নে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সেসময় দলটির মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেছিলেন, ‘ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী নারীদের অধিকার রক্ষা করবে তালেবান। স্বাস্থ্যখাত-সহ অন্য যেসব খাতে নারীদের প্রয়োজন রয়েছে, সেখানে তারা কাজ করতে পারবেন। নারীদের প্রতি কোনো বৈষম্য করা হবে না।’
টিএম