বিশ্বের সঙ্গে আলোচনা চায় আফগান সরকার, বলছে চীন

বিশ্বের সঙ্গে সংযোগ আরও বাড়াতে চায় আফগান সরকার। এ লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে সংলাপ শুরু করতে আগ্রহী আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবানগোষ্ঠী।
আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে দেশটির প্রতিবেশী দেশসমূহের যে বৈঠক ইরানের রাজধানী তেহরানে শুরু হয়েছে, সেখানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।
ওয়াং ই বলেন, ‘তালেবান বাহিনী বিশ্বের সঙ্গে সংলাপে যেতে আগ্রহী। চীন এ ব্যাপারে তাদের সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যথা সময়ে এই সংলাপ শুরু হবে।’
আফগানিস্তান ইস্যুতে ৭ দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক ডেকেছে ইরান। ২৭ অক্টোবর থেকে তেহরানে এ বৈঠক শুরু হয়েছে।
বৈঠকে অংশ নেওয়া ইরান, পাকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান ও চীন- এই ৬ টি দেশের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে আফগানিস্তানের। তার বাইরে একমাত্র দেশ হিসেবে বৈঠকে উপস্থিত রয়েছে রাশিয়া।
এ বিষয়ে গত ১৮ অক্টোবর ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাহমুদ খাতিবজাদেহ কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে বলেছিলেন, গত সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে ভার্চুয়াল এক বৈঠকে বসেছিল এই সাত দেশ। অক্টোবরের বৈঠকটি হবে তারই বর্ধিত অংশ।
তিনি আরও বলেছিলেন, বৈঠকে অংশ নেয়া ৭ টি দেশই আফগানিস্তানে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার দেখতে চায়। এমন একটি সরকার, যেখানে আফগানিস্তানে বসবাসরত সব জাতির প্রতিনিধিত্ব এবং নারীদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে।
গত ১৫ আগস্ট কাবুল দখলের মাধ্যমে ২০ বছর পর আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসীন হয় তালেবান গোষ্ঠী। তার প্রায় তিন সপ্তাহ পর, সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে একটি সরকারও গঠন করে তারা।
কিন্তু ২০২০ সালে কাতারের রাজধানী দোহায় যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়াসহ অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে যে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকারের প্রতিশ্রুতি তালেবান প্রতিনিধিদল দিয়েছিল, তার কোনো প্রতিফলন নতুন সরকারে দেখা যায়নি।
এদিকে, তালেবান বাহিনী যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নিষিদ্ধ সংগঠনের তালিকাভুক্ত হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভে আফগানিস্তানের যে রিজার্ভ জমা ছিল, তা আটকে গেছে।
বিদেশের অন্যান্য বিভিন্ন ব্যাংকে জমা থাকা সরকারি অর্থও তুলতে পারছে না তালেবান। একই সঙ্গে, আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাসমূহও তাদের অর্থ সহায়তা স্থগিত করেছে।
আফগানিস্তানের অর্থনীতি ব্যাপকভাবে বিদেশি সাহায্যনির্ভর। সরকারি অর্থ আটকে থাকা ও অর্থ সহায়তা স্থগিত হওয়ার ফলে সীমাহীন চাপে পড়েছে আফগান অর্থনীতি। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক মানুষ ব্যাপকমাত্রায় খাদ্য ও জীবনযাপণের জন্য অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণের সংকটে পড়েছেন এবং দিন দিন এই সংকট বাড়ছে।
এসএমডব্লিউ