সাঈদ ফুডসের এমডি ও তার স্ত্রীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
ওয়ান ব্যাংকের ১৬০ কোটি টাকার খেলাপি অনাদায়ি ঋণের কারণে সাঈদ ফুডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আবু সাঈদ চৌধুরী (সম্রাট) ও পরিচালক তার স্ত্রী সালমা সাঈদ চৌধুরীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত।
বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন।
ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ওয়ান ব্যাংকের ১৬০ কোটি টাকার খেলাপি অনাদায়ি ঋণের কারণে ব্যাংকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের দুজনকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ওয়ান ব্যাংক চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে শাখা থেকে ৮৬ কোটি ৭১ লাখ ৩২ হাজার ৯৪৪ টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ের দাবিতে ২০১৫ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সাঈদ ফুডস লিমিটেডর ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে এই অর্থঋণ মামলা দায়ের করা হয়। ২০১১ সালে তারা ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ সুবিধায় ৫৮ কোটি ৬৯ লাখ ২৮ হাজার ৪০৭ টাকা ঋণ গ্রহণ করলেও ২০১৫ সালের ৭ সেপ্টেম্বরের আগ পর্যন্ত এক টাকাও পরিশোধ করেনি। বিবাদীরা বিভিন্ন তারিখে ব্যাংকে চিঠি দিয়ে ৬০ কোটি টাকা ঋণ পুনঃতফসিলের আবেদন করলেও আবেদনের সমর্থনে প্রয়োজনীয় কোনো ডাউন পেমেন্ট পরিশোধ করেনি। এই বিপুল ঋণের বিপরীতে কোনো স্থাবর সম্পত্তি সহায়ক জামানত হিসাবে দায়বদ্ধ নেই।
মূল ঋণ ৫৮ কোটি ৬৯ লাখ ২৮ হাজার ৪০৭ টাকা বিতরণের ১১ বছর অতিক্রম করলেও বিবাদীরা কেবলমাত্র ৫ লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন। যা বর্তমানে সুদ-আসলে দেনার পরিমাণ ১৬০ কোটি টাকার বেশি।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলা দায়েরের পর থেকে বিআরপিডি সার্কুলারের আওতায় ডাউন পেমেন্ট পরিশোধ করে সুদ মওকুফ সুবিধার মাধ্যমে ঋণ পরিশোধের কোনো সদিচ্ছাও বিবাদীরা দেখাননি।
আদালত আদেশে বলেছেন, সার্বিক বিবেচনায় বিবাদীরা অভ্যাসগত ঋণখেলাপি বলেই প্রতীয়মান হয়েছে। ঋণের বিপরীতে কোনো স্থাবর সম্পত্তি সহায়ক জামানত হিসেবে দায়বদ্ধ না থাকায় বিবাদীরা দেশত্যাগ করলে সম্ভাব্য টাকা আদায় করা অসম্ভব হয়ে যাবে। সার্বিক বিবেচনায় নাগরিকদের বিপুল পরিমাণ আমানতের টাকা সুরক্ষিত করার নিমিত্তে বাদী ব্যাংকের আবেদন বিবেচনায় নিয়ে মো. আবু সাঈদ চৌধুরী সম্রাট ও সালমা সাঈদ চৌধুরীকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হলো। তারা যেন দেশত্যাগ করতে না পারে তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আদেশের কপি ইমিগ্রেশন শাখার পুলিশ সুপার বরাবর প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
কেএম/ওএফ