পিকে হালদারের বান্ধবী অবন্তিকার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদারের সহযোগী ও বান্ধবী অবন্তিকা বড়াল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ উর রহমানের আদালতে তার জবানবন্দি নেওয়া হয়। জবানবন্দি শেষে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালতের দুদক শাখার সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানিয়েছে, এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন তিন দিনের রিমান্ড শেষে অবন্তিকাকে আদালতে হাজির করেন। স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে ৪ মার্চ ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত অবন্তিকার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত ১৩ জানুয়ারি সকালে ধানমন্ডির ১০ নং সড়কের একটি বাসা থেকে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা ও উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের নেতৃত্বে একটি টিম তাকে গ্রেফতার করে। গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছিল। তবে ওই সময় তিনি হাজির হননি।
পি কে হালদার, তার ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রী এবং অবন্তিকা বড়াল মিলে ‘সুখদা’ নামে একটি কোম্পানি গড়ে তুলেছিলেন। যার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব বিষয়ে জানতেই অবন্তিকা বড়ালকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। অভিযোগ রয়েছে, পি কে হালদার ওই প্রতিষ্ঠানসহ পিপলস লিজিং ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানির (বিআইএফসি) দায়িত্ব পালন করে প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করেছেন।
ক্যাসিনো অভিযানের ধারাবাহিকতায় তার বিরুদ্ধে এরইমধ্যে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ক্যাসিনোবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের পরপরই প্রশান্ত কুমার হালদারের নাম উঠে আসে। গত ৮ জানুয়ারি দুদকের অনুরোধে গ্রেফতারি পরোয়ানা দিয়ে রেড এলার্ট জারি করে ইন্টারপোল। এছাড়া ৯ ফেব্রুয়ারি সাড়ে ২০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও পাচারের সম্পৃক্ততায় পি কে হালদারের পাঁচ সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
এর আগে ২৫ জানুয়ারি পি কে হালদার কেলেঙ্কারিতে ৩৫০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৩৩ শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক আরও ৫ মামলা করে দুদক। সর্বশেষ গত ৯ মার্চ কাগুজে প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে ৮০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আলোচিত পি কে হালদারসহ ৩৭ জনের বিরুদ্ধে ১০ মামলা অনুমোদন দেয় সংস্থাটি। এ কেলেঙ্কারিতে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন ৭ জন। যাদের মধ্যে উজ্জ্বল কুমার নন্দী ছাড়াও পি কে হালদারের সহযোগী শংখ বেপারী ও রাশেদুল হক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
টিএইচ/আরএইচ