যৌতুকের জন্য ওড়না পেঁচিয়ে স্ত্রীকে খুন, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

রাজধানীর খিলক্ষেতে যৌতুকের জন্য ওড়না পেঁচিয়ে দুলালী বেগম নামে এক গৃহবধূকে হত্যার দায়ে তার স্বামী হাবিল বাদশাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দণ্ডের পাশাপাশি তাকে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৮ মে) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক মাফরোজা পারভীনের আদালত আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। এরপর সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সংশ্লিষ্ট আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রেজাউল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, বাদী রওশন আরা বেগমের মেয়ে দুলালী বেগমের সঙ্গে ২০১৫ সালে আসামি হাবিল বাদশার বিয়ে হয়। এরপর বাদী তার ছেলে সুমন (১৪) ও জামাই মেয়েকে নিয়ে খিলক্ষেতে বসবাস করে আসছিল। বাদী ও তার মেয়ে দুলালী অন্যের বাসায় ঝিয়ের কাজ করত। হাবিল রিকশা চালাত। বিয়ের কিছুদিন পর আসামি হাবিল অটোরিকশা কেনার জন্য দুলালীর কাছে ১ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। কিন্তু দরিদ্রতার কারণে দিতে না পারায় দুলালীর সঙ্গে প্রায় ঝগড়া বিবাদসহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত হাবিল।
এরপর ২০১৭ সালের ২ আগস্ট সকালে বাদী রওশন আরা ও তার ছেলে কাজে বেরিয়ে যায়। এই সুযোগে ঝগড়ার জের ধরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে দুলালীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। কিন্তু ঘটনা ধামা চাপা দেওয়ার জন্য প্রথমে আসামি হাবিল বাদীসহ দুলালীর পরিবারকে জানায় স্ট্রোক করে মারা গেছে। দুলালীকে গ্রামের বাড়ি শেরপুরে মরদেহ নিয়ে দাফন করতে বলেন হাবিল। পরে মরদেহ শেরপুরে নিয়ে গোসল করানোর সময় দুলালীর গলায় আঘাতের চিহ্ন দেখে স্থানীয় লোকজন আসামি হাবিলকে জেরা করতে থাকে। এতে সে একেক সময় একেক কথাবার্তা বলে। পরে আসামি হাবিল স্বীকার করে, সকাল ৬টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে দুলালীকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে।
এ ঘটনায় ২০১৭ সালের ৫ আগস্ট দুলালীর মা রওশন আরা বেগম খিলক্ষেত থানায় হাবিল বাদশার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে একই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর খিলক্ষেত থানার উপ-পরিদর্শক (নিরস্ত্র) সহিদুর রহমান আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলাটিতে ২০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।
এনআর/এমএ