মিতু হত্যা : আদালতে এক সাক্ষীর জবানবন্দি

চট্টগ্রামে মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় খন্দকার মোখলেছুর রহমান নামে এক সাক্ষী আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৫ মে) চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফিউদ্দিনের আদালতে জবানবন্দি দেন তিনি। ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় কর্মরত পাঁচলাইশ থানার জিআরও উপপরিদর্শক (এসআই) শাহীন ভূইয়া। তিনি বলেন, আদালতে মোখলেছুর রহমান নামে এক সাক্ষী জবানবন্দি দিয়েছেন।
সাক্ষ্য দেওয়া মোখলেছুর রহমানের বাড়ি পাবনা জেলায় বলে জানা গেছে। তিনি এর আগে আদালতে সাক্ষ্য দেয়া বাবুল আক্তারের বন্ধু সাইফুলের কর্মচারী।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, মিতু হত্যার পর বাবুল আক্তারের বন্ধু সাইফুল তিন লাখ টাকা দেন আল মাহমুদ নামের একজনকে। এ আল মাহমুদ হলেন মামলার অন্যতম আসামি মাহমুদ মুছার আত্মীয়। এ বিষয়ে মোখলেছ আদালতে সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, জবানবন্দিতে মোখলেছুর রহমান বলেছেন, বাবুল আক্তার তিন লাখ টাকা দেওয়ার জন্য সাইফুলকে ফোন করেন। পরে সাইফুল তার মাধ্যমে টাকাগুলো বিকাশে মুছার আত্মীয় মাহমুদকে দেন।
এর আগে তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, বাবুল আক্তারের বন্ধু সাইফুল বিকাশের মাধ্যমে যে টাকা পাঠিয়েছিলেন সেগুলো মুছাকে দেন মাহমুদ। হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া টাকাগুলো বাকি আসামিদের মধ্যে বণ্টন করেন মুছা। তবে কাকে কত টাকা দেওয়া হয়েছিল তা এখনও জানা যায়নি।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে মামলায় অভিযোগ করেন তিনি। তবে দিন যত গড়িয়েছে মামলার গতিপথও পাল্টেছে। এক পর্যায়ে সন্দেহের কেন্দ্রবিন্দুতে আসে মিতুর স্বামী বাবুল আক্তারের নাম। তদন্তে তার বিরুদ্ধেই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১১ মে ডেকে তাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন।
পরে ১২ মে বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাবুল আক্তারকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। রিমান্ড শেষে প্রথমে আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার কথা থাকলেও পরে জবানবন্দি দেননি বাবুল। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম কারাগারে আছেন।
কেএম/এফআর