আইনজীবী নেই, আপিল বিভাগে রুবিয়া লড়লেন নিজেই

দীর্ঘ দিন ধরে মামলা ঝুলে থাকায় আপিল বিভাগে সংযুক্ত হয়ে নিজেই মামলা দ্রুত শুনানির আবেদন জানালেন ৬১ বছর বয়সী ময়মনসিংহের রুবিয়া হেলাল।
রোববার (৩১ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির ভার্চুয়াল আপিল বেঞ্চে বিচারকাজ শুরু হয়। এ সময় আপিল বিভাগের এজলাস কক্ষ থেকে আদালতে সংযুক্ত হন রুবিয়া হেলাল। তখন প্রধান বিচারপতি তার আইনজীবী কে তা জানতে চান। রুবিয়া হেলাল উত্তরে বলেন, আজ আমার কোনো আইনজীবী নেই।
রুবিয়া আদালতে বলেন, ২০১৮ সালের হাইকোর্ট আমার পক্ষে একটি রায় দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১৯ সালে আপিল বিভাগে আবেদন করে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই আবেদনের শুনানি হয়নি। আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়ায় আমার প্রকল্পগুলো আটকে আছে।
তখন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী বলেন, যেহেতু ২০১৯ সালের সিভিল পিটিশন (লিভ টু আপিল) সেহেতু এটা শুনানির জন্য তালিকায় আসতে পারে।
এ সময় প্রধান বিচারপতি রুবিয়ার উদ্দেশে বলেন, মামলার নথি দেখে আইনানুযায়ী বিচারকাজ হবে। এরপর আদালত বুধবার (৩ নভেম্বর) মামলাটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসার আদেশ দেন।
জানা যায়, রুবিয়া হেলাল বাংলাদেশ মহিলা উন্নয়ন সমিতি নামে মানবাধিকার সংস্থার চেয়ারম্যান। সংগঠনটির প্রধান অফিস ময়মনসিংহে।
মানবাধিকার সংস্থা হিসেবে মহিলা বিষয়ক অধিদফতর থেকে অনুমোদন নিয়ে ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ মহিলা উন্নয়ন সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন রুবিয়া হেলাল। ২০০৫ সালের ১০ এপ্রিল মোটরসাইকেল ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগে সমিতিকে কালো তালিকাভুক্ত করে সরকার।

রুবিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানটিকে কালো তালিকাভুক্ত করার পর ২০০৬ সালে আমরা হাইকোর্টে আসি। হাইকোর্ট ২০১৮ সালে কালো তালিকার সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন। হাইকোর্টের এ আদেশের পরে আমাদের পাওনা ২৫ লাখ টাকা ফেরত চাই। তখন রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে। আপিল বিভাগের এখন সেটা পেন্ডিং আছে। এটা পেন্ডিং থাকার কারণে গাইবান্ধা সদর উপজেলা, হালুয়াঘাট, সিরাজগঞ্জের তারাশ ও নেত্রকোনার খালিয়াজুরির উপ-আনুষ্ঠানিক প্রকল্প বন্ধ রয়েছে আমাদের প্রতিষ্ঠানের। ওই প্রকল্পে অনেক শিক্ষক কাজ করেছেন।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের দীর্ঘ দিন শুনানি না হওয়ায় আমি নিজে আপিল বিভাগে এসেছি। আদালত শুনে মামলাটি শুনানির জন্য আগামী বুধবার তালিকায় রেখেছেন। এখন একজন আইনজীবী নিয়োগ দিব।
আপিল বিভাগে নিজেই শুনানি করা প্রসঙ্গে রুবিয়া হেলাল বলেন, সর্বোচ্চ আদালতে কথা বলব এটা জীবনেও চিন্তা করিনি। আমি নিজেও কথা বলার সুযোগ খুঁজছিলাম। আজ সেই সুযোগ পেয়েছি। আপিল বিভাগের মাননীয় বিচারপতিরা আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। এজন্য আমি কৃতজ্ঞ।
এমএইচডি/এইচকে