রাজধানীতে সীমাহীন যানজট

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েছে সরকার। সোমবার (৫ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকেই কার্যকর হবে এই নির্দেশনা। এমন ঘোষণায় অনেকে রোববার (৪ এপ্রিল) সকাল থেকেই রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছেন। ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার তৎপরতা ও সন্ধ্যায় ঝড়-বৃষ্টি। এই দুইয়ে মিলে ঢাকার রাস্তায় সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট।
সরকারের এমন ঘোষণায় রাজধানীর বাস টার্মিনাল, রেল স্টেশন ও সদরঘাটের লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে সকাল থেকেই। বিকেল ৫টার পর থেকে মানুষের ভিড় আরও বাড়তে থাকে। আর সন্ধ্যার দিকে ঝড়-বৃষ্টির শুরু হলে অনেকটাই থেমে যায় রাজধানীর যান চলাচল।
রোববার রাতে সরেজমিনে দেখা যায়, কুড়িল বিশ্বরোড, প্রগতি সরণি, বাড্ডা-মালিবাগ রোড, সদরঘাট, গুলিস্তান, শাহবাগ-ফার্মগেট, বিজয় সরণি, মানিক মিয়া এভিনিউ, মিরপুর রোড, সদরঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় গাড়িরে বেশ চাপ। যানজটে আটকা পড়ে অ্যাম্বুলেন্সও। এছাড়া বিভিন্ন অলি-গলিতে রিক্সা ও মোটরসাইকেল ঢুকে সেসব রাস্তায় জ্যামের সৃষ্টি করেছে। গাড়ি না পেয়ে অনেকে হেঁটেই নিজ গন্তব্যে ফিরছেন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রাজধানীর গাবতলি রোড, বাইপাইল রোড ও টঙ্গী রোডে ব্যাপক গাড়ির চাপ লক্ষ্য করা গেছে।
অফিস ফেরত আশরাফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, মতিঝিল থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত বাইকে আসতে আমার দেড় ঘণ্টা সময় লেগেছে। বাসায় যেতে কতক্ষণ লাগবে এখনও বুঝতে পারছি না। একবার বাইকের স্টার্ট বন্ধ করলে কমপক্ষে ১০ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়। তারপর বড়জোর ৫০ মিটার সামনে যাওয়া যায়।
ফার্মগেট এলাকায় কথা হয় আরিফ খানের সঙ্গে। তিনি বলেন, শাহবাগ থেকে বাসে উঠেছিলাম এক ঘণ্টা আগে। রাস্তার যে অবস্থা তাতে উত্তরা পৌঁছাতে আরও দুই ঘণ্টা লাগবে মনে হচ্ছে। লকডাউনের আগে এমন ভয়াবহ জ্যাম পড়তে হবে বুঝতে পারিনি।
মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা করা জাহিদ আহসান বলেন, কয়েকটি কাজের জন্য সাত দিন আগে ঢাকায় এসেছিলাম। কিন্তু কাল থেকে লকডাউন হবে। কাজ শেষ হওয়ায় বাড়ি ফিরছি। বাস পেতে তিন ঘণ্টা লেগেছে। আর ২৫০ টাকার ভাড়া ৫০০ টাকা দিতে হয়েছে।
করোনার সময় রাজধানীতে যাদের কাজ নেই মূলত তারাই আটকে পড়ার ভয়ে ছুটছেন বাড়ির পথে। ফলে বাস টার্মিনাল, রেল স্টেশন ও লঞ্চঘাটে স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েকগুণ মানুষের জটলা তৈরি হয়েছে। গাদাগাদি, ঠেলাঠেলি আর ধাক্কাধাক্কি ছিল টার্মিনালগুলোর সার্বিক চিত্র। ফলে যে উদ্দেশ্যে সরকারের কঠোর এই বিধিনিষেধ, সেটি কতটুকু কার্যকর হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। ১১ এপ্রিল পর্যন্ত এসব বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। রোববার (৪ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এমএইচএন/ওএফ