বিজয় উল্লাসে মুক্ত হয় মৌলভীবাজার

আজ ৮ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার। আজকের এই দিনে মুক্ত হয় মৌলভীবাজার। ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার থেকে হানাদার বাহিনী পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল।
সেই খবর পৌঁছে যায় গ্রামে। যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে শহরের প্রবেশ মুখে ব্যারিকেড দেয়া হয়। ৮ ডিসেম্বর মানুষের বাঁধভাঙা বিজয় উল্লাসের জোয়ার ঠেকানো যায়নি। মহকুমা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান গণপরিষদ সদস্য আজিজুর রহমান।
জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ ভারত থেকে চাতলাপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে মিত্র ও মুক্তিবাহিনী। প্রথমেই প্রতিরোধের সম্মুখীন হন মুক্তিযোদ্ধারা। এখানে আড়াইশ মুক্তিযোদ্ধা প্রাণ হারান।
মুক্তিযুদ্ধকালীন শমশেরনগর ছিল গুরুত্বপূর্ণ বিমানঘাটি। ফলে এই অঞ্চলে পাক হানাদার বাহিনীর অত্যাচার ও নির্যাতনও ছিল বেশি। শমশেরনগরে সর্বপ্রথম ১৯৭১ সালে ২৮ মার্চ একজন ক্যাপ্টেনসহ নয় পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করে মুক্তিযোদ্ধারা।
গেরিলা হামলায় টিকতে না পেরে হানাদার বাহিনী ৩ ডিসেম্বর শমশেরনগর ছেড়ে মৌলভীবাজার জেলা সদরের দিকে চলে যায়। হানাদার মুক্ত হয় শমশেরনগর। সেখানেই পরবর্তী কৌশল নির্ধারণ করেন মুক্তিযোদ্ধারা। ৭ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার থেকে হানাদার বাহিনী পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে বিজয় উল্লাস।
স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা জামাল উদ্দিন বলেন, ২৯ মার্চ আমরা সিদ্ধান্ত নেই পাকবাহিনীকে আক্রমণ করে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী বাংলার মাটিকে মুক্ত করব। তার ধারাবাহিকতায় চাতলা বিওপি থেকে পাকবাহিনীর ডিফেন্স প্রত্যাহার করতে বাধ্য করি। আমাদের আক্রমণে পাকবাহিনী পিছু হটে।
তিনি আরও বলেন, ৩ ডিসেম্বর আমরা শমশেরনগর থেকে পাকবাহিনীকে মুক্ত করতে সক্ষম হই। পরবর্তীতে একে একে জেলার অন্যান্য থানা মুক্ত ঘোষণা করতে থাকি। পরদিন মৌলভীবাজারের পাকবাহিনীর বিগ্রেড হেড কোয়ার্টারে হামলা করে সেখান থেকে তাদের বিতাড়িত করি। ৮ ডিসেম্বর আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে মৌলভীবাজার মহকুমার কার্যালয়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করে মুক্ত ঘোষণা করি।
এসপি