আকবর আলী খান নতুন প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ হয়ে থাকবেন
ড. আকবর আলি খান দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য তিনি তার মেধা ও মননকে কাজে লাগিয়েছেন। অর্থনীতি ও ইতিহাস ছাড়াও নৃবিজ্ঞান ও সাহিত্য-সমালোচনার ক্ষেত্রেও তিনি তার প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। বহু বিচিত্র বিষয়ে তার আগ্রহ তাকে একজন বহুমাত্রিক পণ্ডিতের পর্যায়ে উন্নীত করেছে। নতুন প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ হয়ে থাকবেন তিনি।
শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বইমেলার মূলমঞ্চে একুশে বইমেলায় বাংলা একাডেমি আয়োজিত ‘স্মরণ অনুষ্ঠান : ড. আকবর আলি খান’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে আলোচকরা এসব কথা বলেন।
আলোচনায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আমিনুল ইসলাম ভুইয়া। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ফারুক মঈনউদ্দীন, মো. মোফাকখারুল ইকবাল এবং কামরুল হাসান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদ সাদিক।
প্রাবন্ধিক বলেন, ড. আকবর আলি খান প্রশাসনের বহু পদে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। মুজিবনগর সরকারে তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব ছিলেন, পাকিস্তান সরকার তার বিরুদ্ধে জেলদণ্ডও ঘোষণা করেছিল। বহুকাল তিনি অর্থসচিব হিসেবে কাজ করেছেন, বাংলাদেশের হয়ে বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক ছিলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টাও ছিলেন। সরকারি প্রশাসনিক কর্মে এসব সাফল্য সত্ত্বেও মনে করা যায় যে, আকবর আলি খানের মূল পরিচয় তার পাণ্ডিত্যপূর্ণ লেখাজোখায় ছড়িয়ে আছে। পণ্ডিত হিসেবে তিনি অত্যন্ত উচ্চমানের সৃষ্টি রেখে গেছেন।
আলোচকরা বলেন, ড. আকবর আলি খানের কাজের পরিধি ছিল বিস্তৃত। প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে থেকেও সৎ ও নির্ভীক আকবর আলি খান কঠোর ভাষায় অন্যায়, অদক্ষতা ও দুর্নীতির সমালোচনা করেছেন। এ দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির কথা ভাবতেন তিনি। সামাজিক বৈষম্য ও দারিদ্র্য দূর করে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য তিনি তার মেধা ও মননকে কাজে লাগিয়েছেন। অর্থনীতি ও ইতিহাস ছাড়াও নৃবিজ্ঞান ও সাহিত্য-সমালোচনা ক্ষেত্রেও তিনি তার প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। বহু বিচিত্র বিষয়ে তার আগ্রহ তাকে একজন বহুমাত্রিক পণ্ডিতের পর্যায়ে উন্নীত করেছে।
সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ সাদিক বলেন, অর্থনীতি, ইতিহাস, নৃবিজ্ঞান ও সাহিত্য নিয়ে গভীর জ্ঞানতাত্ত্বিক আলোচনা ড. আকবর আলি খানকে যেমন অমর করেছে তেমনি বাঙালি জাতিকে করেছে ঋদ্ধ। এমন একজন বিবেকবান, স্পষ্টভাষী, সৎ ও নির্মোহ মানুষ আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য নিঃসন্দেহে অনুকরণীয় আদর্শ হয়ে থাকবেন।
এদিকে আজ ‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন ফারুক হোসেন, আবদুল বাছির, ইসহাক খান এবং আফরোজা সোমা।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি অসীম সাহা, অঞ্জনা সাহা এবং ফরিদ কবির। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী মো. রফিকুল ইসলাম, অলোক কুমার বসু এবং মিজানুর রহমান সজল। এছাড়াও ছিল গোলাম কুদ্দুছের নেতৃত্বে সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বহ্নিশিখা’-এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী দিল আফরোজ রেবা, চন্দনা মজুমদার, আব্দুল লতিফ শাহ এবং শাহ আলম দেওয়ান। যন্ত্রানুসঙ্গে ছিলেন তুলসী সাহা (তবলা), ডালিম কুমার বড়ুয়া (কী-বোর্ড), রতন কুমার রায় (দোতারা), মো. ফায়জুর রহমান (বাঁশি)।
এইচআর/এসএসএইচ/