আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী ছিলেন সাংবাদিকতা জগতের মহীরূহদের একজন
বিশিষ্ট সাংবাদিক, গীতিকার, কলামিস্ট ও সাহিত্যিক আবদুল গাফফার চৌধুরী পেশাগত জীবনে প্রাণের আনন্দ খুঁজে পেয়েছিলেন লেখালেখিতে। আজীবন তিনি অসাম্প্রদায়িক চেতনা লালন করেছেন এবং অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে কলম ধরেছেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের সাংবাদিকতা জগতের মহীরূহদের একজন।
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বইমেলার মূলমঞ্চে বাংলা একাডেমি আয়োজিত ‘স্মরণ অনুষ্ঠান : আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে আলোচকরা এসব কথা বলেন। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মফিদুল হক। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন হারিসুল হক এবং অপূর্ব শর্মা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আবেদ খান।
প্রাবন্ধিক বলেন, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী দীর্ঘজীবী কর্মবীর ব্যক্তিত্ব। তার প্রধান পরিচয় সাংবাদিক ও লেখক হিসেবে। উভয় ক্ষেত্রে তার হাতে ছিল কলম, যা অপূর্ব আলোর ঝলকানিতে জ্বলে উঠেছিল বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনের পর। আবেগ ও উপলব্ধির মিশেল ঘটিয়ে তিনি এমন এক কবিতা লিখেছিলেন যা ছুঁয়ে গিয়েছিল জাতির অন্তর, আলতাফ মাহমুদের সুরে একুশের প্রভাতফেরিতে গীত হয়ে যুগিয়েছিল জাগরণের বাণীমন্ত্র। সেই থেকে তার কলম নানা সন্ধিক্ষণে সমাজের চিন্তাকে প্রভাবিত করেছে, মানুষকে আলোড়িত করেছে, বাঙালিকে করেছে জাতিচেতনায় সংহত।
আলোচকরা বলেন, বাঙালির ভাষা আন্দোলন নিয়ে বহু গান রচিত হলেও সাংবাদিক, কবি, কলামিস্ট আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী রচিত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানটি সব বাঙালির মনে স্থায়ী আসন করে নিয়েছে। পেশাগত জীবনে সাংবাদিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী প্রাণের আনন্দ খুঁজে পেয়েছিলেন লেখালেখিতে। আজীবন তিনি অসাম্প্রদায়িক চেতনা লালন করেছেন এবং অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে কলম ধরেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে আবেদ খান বলেন, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর জীবন ও কর্ম অনেক বিস্তৃত। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের সাংবাদিকতা জগতের মহীরূহদের একজন। যে আদর্শ ও সৃজনশীলতা নিয়ে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী সাংবাদিকতা করেছেন তা আমাদের জন্য আদর্শ হয়ে থাকবে।
সোমবার ছিল অমর একুশে বইমেলার ১৩তম দিন। এ দিন মেলা শুরু হয় বিকেল ৩টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। আজ নতুন বই এসেছে ১০৫টি।
আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন শাহনাজ মুন্নী, তসিকুল ইসলাম, দন্ত্যস রওশন এবং মামুন রশীদ।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন শাহনাজ মুন্নী, ওবায়েদ আকাশ, সাকিরা পারভীন, হানিফ খান এবং জিললুর রহমান। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী নাসিমা খান বকুল এবং জয়ন্ত রায়। এছাড়াও ছিল ঝর্ণা আলমগীরের সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী’, সৌন্দর্য প্রিয়দর্শিনী ঝুম্পার পরিচালনায় নৃত্য সংগঠন ‘জলতরঙ্গ ডান্স কোম্পানী’-এর পরিবেশনা।
সংগীত পরিবেশন করেন মো. খালেদ মাহমুদ মুন্না, অনন্যা আচার্য্য, কাজী মুয়ীদ শাহরিয়ার সিরাজ জয়, মো. রেজওয়ানুল হক, ফারহানা শিরিন, শরণ বড়ুয়া এবং নাসিমা শাহীন ফ্যান্সী। যন্ত্রাণুসঙ্গে ছিলেন সৌমিত্র মুখার্জি (তবলা), সুমন রেজা খান (কি-বোর্ড), অমিত দাস (গিটার) এবং মনির হোসেন (অক্টোপ্যাড)।
এইচআর/এসএসএইচ/