সাংবাদিকতা শুধু পেশা নয়, ভালো কাজের প্রতিশ্রুতি
সাংবাদিকতা শুধু পেশা নয়, সমাজে ভালো কাজ করার প্রতিশ্রুতি বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার ও আজকের পত্রিকার সম্পাদক অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান। তিনি বলেন, সমাজের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ থেকে সমাজের জন্যে কাজ করা সাংবাদিকতার অন্যতম লক্ষ্য।
বুধবার (১০ মার্চ) বিকেলে খন্দকার আবু তালহা স্মৃতি সাহসীকতা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। জাতীয় প্রেসক্লাবে খন্দকার আবু তালহা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগ যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্যে পুরস্কার পান প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। ক্রেস্ট ও সনদপত্রের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা মূল্যমানের পুরস্কার পান তিনি। এ সময় অনুষ্ঠানে তিনি প্রতিবেদনটি তৈরির বিষয়ে অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান বলেন, সাংবাদিকতা একটি মহান ব্রত। সাংবাদিকতা শুধু একটা পেশা নয়, সাংবাদিকতা একটা নেশাও। সমাজ সংস্কার, সমাজে ভালো কাজ করার প্রতিশ্রুতি। সাংবাদিকতা হচ্ছে সমাজের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধতা থেকে নিজেকে সেক্রিফাইস ও নিবেদিত করে সমাজের জন্য কাজ করা। তাই সাংবাদিকতাকে শুধু একটি চাকরি বা পেশা হিসেবে বিবেচনা করা যায় না।
তিনি বলেন, একটি বিষয়ের ওপর দীর্ঘদিন লেগে থেকে তথ্য সংগ্রহের পর সংবাদ পরিবেশনের মধ্যে কিন্তু সাংবাদিকের আত্মতুষ্টি রয়েছে। কী করলাম, কী করতে পারি সমাজের জন্যে এই আত্মজিজ্ঞাসা আমরা বেশিরভাগ মানুষ করি না। আমরা নিজেদের নিয়ে সেভাবে চিন্তা করি না। যা আছে তাতেই চলে যাচ্ছে এরকম সহজভাবেই ভেবে থাকি। কিন্তু নিজেদের মধ্যে আত্মজিজ্ঞাসা থাকা দরকার।
এই শিক্ষাবিদ ও গবেষক বলেন, আমরা জানি আমাদের মানবাধিকার কত ভয়াবহভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। অনেকক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ বিচার পান না। আমাদের সবই আছে, কোর্ট আছে, পুলিশ আছে, আইন আদালত সবই আছে, বিচার ব্যবস্থাও আছে- কিন্তু হাজার হাজার, লাখ লাখ মামলা পরে আছে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর।
অনেক সাংবাদিক হতাশার মধ্যে আছেন উল্লেখ করে ড. গোলাম রহমান বলেন, আজ সাংবাদিকতা পেশায় অনেকেই সন্তুষ্টি না। কারণ, আমরা জানি বিশ্ব আজ টালমাটাল অবস্থায় আছে। করোনা সংক্রমণের ভয়াবহতায় পুরো বিশ্ব থেমে আছে। কিন্তু সেখানে সম্মুখ সমরের যোদ্ধা হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন এই সাংবাদিকরাই। সুতরাং তাদের যে অবদান তা ছোট করে দেখা যাবে না।
অনেক ঝুঁকির মধ্যে সাংবাদিকদের কাজ করতে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেকেই বঞ্চিত হচ্ছেন, অনেকে তাদের নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারছেন না, কোথাও বেতন, কোথাও ভাতা পাচ্ছেন না, ঝুঁকির বিনিময়ে কিছু পাচ্ছেন না। আইন আদালতের সহায়তা পাচ্ছে না। এ অবস্থার মধ্যে তারা সাংবাদিকতা করে যাচ্ছেন, গণমানুষের সেবা করে যাচ্ছেন এবং সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এই মহৎ উদ্যোগের কারণেই তারা বীর।
অনুষ্ঠানে খন্দকার আবু তালহা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান প্রয়াত খন্দকার আবু তালহার বাবা আবু রিয়াজ মো. নূরুদ্দিন খন্দকার, বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন অধ্যাপক এ এম এম হামিদুর রহমান, স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক সৈয়দ মিজানুর রহমানসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন। সভাপতিত্ব করেন ইউনিভার্সিটিটির সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ড. তৌফিক এলাহী।
একে/এইচকে