শ্রমবাজার সব রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য উন্মুক্ত রাখার দাবি

দেশ থেকে বিদেশে লোক পাঠাতে একটি চক্র বিভিন্ন শ্রমবাজারে সিন্ডিকেট তৈরি করে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করছে বলে অভিযোগ করেছে জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বায়রার ‘সম্মিলিত সমন্বয় ফ্রন্ট’।
তারা অবিলম্বে মালয়েশিয়াসহ সব শ্রমবাজার সিন্ডিকেট মুক্ত করে সব রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য উন্মুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছে। মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধন থেকে এই দাবি জানানো হয়।
সেখানে বক্তারা বলেন, মালয়েশিয়া শ্রমবাজার বাংলাদেশি শ্রমিকের তৃতীয় বৃহত্তম বাজার। দেশটিতে লাখ লাখ শ্রমিক কর্মরত এবং বর্তমানেও লাখ লাখ শ্রমিকের চাহিদা রয়েছে। ২০১৬ সালে সম্পাদিত ‘জি টু জি প্লাস’ চুক্তির পর ১২০০ বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিকে বঞ্চিত করে শুধুমাত্র ১০টি এজেন্সির সমন্বয়ে গঠিত একটি সিন্ডিকেটকে শ্রমিক রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়।
মানববন্ধনে তারা বলেন, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে শ্রমিক রপ্তানির ফলে অভিবাসন ব্যয় বেড়ে যায়, শ্রমিক রপ্তানি কমে যায়, ফরেন রেমিট্যান্স কমে যায়, দুর্নীতি ও বৈষম্য বেড়ে যায়। ২০১৬ সালে দুই দেশের সরকার ঘোষণা দেয়, প্রতি বছর তিন লাখ করে পাঁচ বছরে ১৫ লাখ শ্রমিক মালয়েশিয়া যাবে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, ২০১৭/২০১৮ সালের সিন্ডিকেটর মাধ্যমে ১৫ লাখ শ্রমিকের জায়গায় মাত্র দুই লাখ ৭৪ হাজার ৪০০ জন শ্রমিক রপ্তানি হয়েছে। অভিবাসন ব্যয় ৩৭ হাজার টাকার জায়গায় তারা নিয়েছে চার লাখ টাকা। প্রায় সোয়া ১২ লাখ শ্রমিক হারিয়েছে নিশ্চিত চাকরির সুযোগ। চাকরি হারানোর কারণে রাষ্ট্র হারিয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ।
তারা আরও বলেন, সিন্ডিকেট একটি কুপ্রথা, এটি শ্রমিক শোষণের হাতিয়ার। এই পদ্ধতিতে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালিত হলে দেশের জনগণ শোষিত হয়, জনগণের মধ্যে বৈষম্যের সৃষ্টি হয়, দুর্নীতি বেড়ে যায়, দেশের উন্নয়ন ব্যাহত হয়। জনশক্তি রপ্তানি বাংলাদেশের অর্থনীতি প্রবৃদ্ধির প্রাণ। জনশক্তি রপ্তানি ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। আজ দেশের যতটুকু উন্নয়ন হয়েছে তার সিংহভাগের দাবিদার জনশক্তি রপ্তানি।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন- সম্মিলিত সমন্বয় ফ্রন্টের সভাপতি ড. মোহাম্মদ ফারুক, মাইক্রো এক্সপার্ট হাউজের সত্ত্বাধিকারী মোস্তফা মাহমুদ, লিজা ওভারসিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিরাজ মিয়া প্রমুখ।
এইচএন/এসএসএইচ/এফআর