সানোফির কাছে ক্ষতিপূরণ চান কর্মীরা

ওষুধ তৈরি প্রতিষ্ঠান সানোফির বাংলাদেশ ছাড়ার ঘোষণায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন বলে দাবি করছেন তাদের কর্মীরা। তাই, কোম্পানিটির কাছে কর্মীরা আর্থিক ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। আজ (মঙ্গলবার) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেড ওয়ার্কার্স এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক অবস্থান কর্মসূচি থেকে তারা এই দাবি জানান।
কর্মীরা বলেন, সানোফি বাংলাদেশের ১ হাজার কর্মচারীর অবস্থান কী হবে, সেটা বিবেচনা না করেই ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ‘সানোফি বাংলাদেশ’ হঠাৎ করেই ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ ছাড়ার। অথচ প্রতিষ্ঠানটি ৬২ বছর ধরে ধারাবাহিক সাফল্যের সাথে ব্যবসা করে আসছে। ভবিষ্যতের এমন চরম দুশ্চিন্তায় রাস্তায় নামতে বাধ্য হয় সাধারণ কর্মচারীরা। তিন মাস আমাদের আন্দোলন করার পর মি. রামপ্রসাদ ভাট আর মি. মুঈনউদ্দীন মজুমদারের মিষ্টি কথায় ভুলে আমরা আবার কাজে ফিরে যাই। উনারা আমাদের বলেন, ব্যবসা ঠিক থাকলে, পজিটিভ এনভায়রনমেন্ট বজায় থাকলে কোম্পানি অবশ্যই আপনাদের দাবি শুনবেন এবং আমরা চাই সানোফি বাংলাদেশের শুভ সমাপ্তি। তাদের এই ধরনের আশ্বাসের বাণী শুনে আমরা আবার কাজে ফিরে যাই, শুরু হয় আমাদের অক্লান্ত পরিশ্রম।
তারা আরও বলেন, ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে এপ্রিল থেকে শুরু হয় ভয়াবহ করোনা ভাইরাসের আক্রমণ। আবার ব্যবসার ক্ষতি, আবারও কমে যায় আমাদের উপার্জন। কিন্তু সানোফি বাংলাদেশের ‘সুপার সেলস কলিগ’ তাদের কঠোর পরিশ্রম অব্যাহত রাখে, ২০২০ সালের জুন মাসে আবার আমরা কোম্পানির ব্যবসা ঠিক করে ফেলি। তারপর ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত আমরা কোম্পানির সেলস টার্গেট অ্যাচিভ করে দেই। শুধু তাই নয় ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আমরা সবসময় তাদের সব কথা বিশ্বাস করি এবং কোনো ধরনের আন্দোলন আমরা করিনি তাদের বিশ্বাস করে। গতকাল ট্রেড ইউনিয়নের সঙ্গে এক মিটিংয়ে মুঈনউদ্দীন মজুমদার বলেন, আমি মনে করতে পারি না যে আমরা আপনাদের কোনো আশা দেখিয়েছিলাম ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে।
কর্মীরা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আজকে ২০ দিন হলো আমরা সাধারণ কর্মচারীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান ধর্মঘট করছি। একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির ৫০০ এমপ্লয়ি রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে ২০ দিন ধরে। আপনারা শুনে অবাক হয়ে যাবেন এই ২০ দিনে ম্যানেজমেন্টের লোকজন একটিবারের জন্যও দেখা করতে আসেনি। অথচ এই কর্মকর্তা-কর্মচারীর অক্লান্ত পরিশ্রম করে তিলে তিলে গড়ে তুলেছে আজকের সানোফি। সানোফি ৪০০ কোটি টাকায় শেয়ার বিক্রি করে এই দেশ থেকে চলে যাচ্ছে, কিন্তু তারা তাদের কর্মীদের জন্য কোনো আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিয়ে যাচ্ছে না। বাংলাদেশে অতীতে এবং সাম্প্রতিক সময়ে যতো আন্তর্জাতিক কোম্পানি এই দেশ ছেড়ে চলে গেছে কিংবা শেয়ার বিক্রি করেছে, প্রত্যেক ক্ষেত্রেই সেই সব কোম্পানি তার কর্মীদের যথাযথ আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিয়ে গেছে।
এইচএন/এনএফ