বিএনপি প্রার্থীর বর্জনে উৎসবহীন ভোট দেখল ফরিদগঞ্জ

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ পৌরসভার ভোট নিয়ে আনন্দ আর আগ্রহের শেষ ছিল না ভোটারদের। রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরুর পর প্রায় দেড়ঘণ্টা চলে ভোটের প্রতিদ্বন্দ্বিতা। এরপরই ধানের শীষের মনোনীত বিএনপি প্রার্থী মো. ইমাম হোসেন পাটওয়ারীর ভোট বর্জনের ঘোষণায় ফিকে হতে থাকে ভোট উৎসব।
ফরিদগঞ্জ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ১১টি কেন্দ্রের প্রায় সব কয়টিতে ঘুরে দেখা গেছে, সকাল ৯টা পর্যন্ত কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। এদিন বেলা ১১টা পর্যন্ত অল্পসংখ্যক ভোটারের উপস্থিতি থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারদের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে প্রার্থীদের।
বিএনপি প্রার্থীর ভোট বর্জনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আবুল খায়ের পাটওয়ারীর বিজয় নিশ্চিত জেনে দলটির নেতাকর্মীরা পছন্দের কাউন্সিলর প্রার্থীদের জয়ী করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এ নিয়ে বেশ কয়েকটি কেন্দ্রের বাইরে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে। বিশেষ করে ফরিদগঞ্জের কাছিয়ারা আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় কেন্দ্রের পাশে পরপর ৪টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এতে গুরুতর আহত হন কাউন্সিলর প্রার্থী মো. আলী হায়দার পাঠান। এছাড়াও কয়েকটি কেন্দ্রের বাইরে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
দুপুর ১২টার দিকে ফরিদগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মসিউর রহমান জানান, সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত কেন্দ্রটিতে মোট ভোটের ৩০ ভাগ ভোট পড়ে। আর বেলা ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষে তিনি জানান, পরের চার ঘণ্টায় মাত্র ১০ ভাগ ভোট পড়েছে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে কেন্দ্রটিতে ভোট পড়েছে শতকরা ৪০ ভাগ।
এদিকে কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটাররা অভিযোগ করেছেন, ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর প্রতীকে তাদের ভোট দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ১৩টি কেন্দ্রের ১১টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সরব উপস্থিতি। বিশেষ করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবির) টহল ছিল চোখে পড়ার মত।
ফরিদগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী ছাড়াও মেয়র পদে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে হাতপাখা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা হাফেজ মো. দেলোয়ার হোসেন। এ পৌরসভায় মোট ভোটার ৩১ হাজার ৭৮ জন। ৯টি ওয়ার্ডের সমন্বয়ে ১৩টি কেন্দ্রের জন্য কাউন্সিলর পদে ৬৪ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে মোট ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২০০৫ সালে ফরিদগঞ্জ পৌরসভা গঠিত হয়। সে অনুযায়ী এটি পৌরসভার তৃতীয় নির্বাচন।
গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে দেশের ২৪টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দ্বিতীয় ধাপে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি ৬১টি পৌরসভায় ও তৃতীয় ধাপে ৬২টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ ধাপে ৫৫টি পৌরসভায় নির্বাচন হচ্ছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম ধাপে দেশের ৩১টি পৌরসভায় নির্বাচন হবে।
এনআই/এসআই/এমএইচএস