টেকসই অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করতে সহযোগিতা করবে কোপেনহেগেন

সবুজ ও টেকসই ফ্রেমওয়ার্ক এনগেজমেন্ট নামে একটি ডকুমেন্টে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ ও ডেনমার্ক। এ চুক্তির আওতায় সবুজ এবং টেকসই অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করতে ঢাকাকে সহযোগিতা করবে কোপেনহেগেন।
সোমবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং ঢাকা সফররত ডেনমার্কের উন্নয়ন ও সহযোগিতা মন্ত্রী ফ্লেমিং মোলার মর্টেনসেন ডকুমেন্ট স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
ডেনমার্কের রাজকুমারী ম্যারি এলিজাবেথের উপস্থিতিতে ফ্রেমওয়ার্ক ডকুমেন্ট সই করা হয়। এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন এবং ডেনমার্কের উন্নয়ন ও সহযোগিতা মোলার এক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে উভয়পক্ষ দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করে।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। ডকুমেন্ট সইয়ে বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা যে ডকুমেন্ট সই করলাম এটা জেনারেল ফ্রেমওয়ার্ক। এর আওতায় আমরা অনেকগুলো অ্যাকশন প্রোগ্রাম নেব। এতে অনেক কিছু হবে। জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে অভিযোজন ও প্রশমনে যত ধরনের প্রোগ্রাম হবে সেগুলো আমরা টাইম টু টাইম এপ্রোচ করব। যাতে তারা আমাদের এগুলোতে সাহায্য করে। অর্থ সহায়তা দেন। সবুজ ও টেকসই ফ্রেমওয়ার্কে তারা আমাদের জ্ঞান ও প্রযুক্তি দিয়ে সহযোগিতা করবে।
ড. মোমেন বলেন, ডেনমার্ক আমাদের পুরনো বন্ধু। ৫০ বছর সম্পর্কে ফ্রেমওয়ার্ক ডকুমেন্ট সইয়ের বিষয়টি একটা ল্যান্ডমার্ক। জলবায়ু ইস্যুটা আমাদের এখানে সিরিয়াস ইস্যু। তারা আমাদের এখানে সাহায্য করবে। ব্লু-ইকোনোমি, ফিশিং এসব প্রযুক্তি ভালো বুঝেন। আমাদের এগুলো প্রয়োজন। সেখানে একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ আছে।
তিনি বলেন, ডেনমার্ক আমাদের বায়োডাইভারসিটির ওপর যথেষ্ট জোর দেবে। এটা আমাদের জন্য সুখবর। গ্রিনার ফিউচার প্রযুক্তিতে ও এক্সপার্টিজে তারা সহযোগিতা করবে। আমরা অধিক নবায়নযোগ্য জ্বালানি চাই। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ পারসেন্ট নবায়নযোগ্য জ্বালানি চাই। এখন সাড়ে ৩ পারসেন্ট আছে। কীভাবে কাজ করা যায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে সেটা নিয়ে আমরা আলাপ করেছি।
ডেনমার্কের উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, আমার প্রথম সফরে বাংলাদেশে এসে এ চুক্তি করতে পারাটা আনন্দের। ডেনমার্ক এবং বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী জলবায়ু এজেন্ডায় শক্তিশালী এবং সক্রিয় দেশ। আমরা আজ যে চুক্তি করলাম সেটা বলে দিচ্ছে, প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে যেসব অঙ্গীকার হয়েছে; সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করতে প্রস্তুত।
সিকিউরিটি কাউন্সিলে রোহিঙ্গা ইস্যু জোরালো করার আহ্বান
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সিকিউরিটি কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে ডেনমার্ককে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আওয়াজ তোলার জন্য দেশটিকে অনুরোধ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন। পাশাপাশি গাম্বিয়ার করা মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় দেশটির সহযোগিতা চেয়েছে ঢাকা।
ড. মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলাপ হয়েছে। ডেনমার্কের রাজকুমারী আজ রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাবেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে শুরু থেকে তারা সাহায্য করছেন। এ ব্যাপারে তারা যথেষ্ট সোচ্চার। এরই মধ্যে তারা ২ মিলিয়ন ইউরো রোহিঙ্গাদের জন্য দিয়েছেন। ভাসানচরে দিয়েছেন। তারা এটা নিয়ে সজাগ।
মোমেন বলেন, আমরা বলেছি, রোহিঙ্গাদের কারণে আমাদের বন নষ্ট হচ্ছে। সেখানেও তারা আমাদের সাহায্য করবেন। সিকিউরিটি কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে তাদের রোহিঙ্গা ইস্যু জোরালোভাবে তোলার অনুরোধ করেছি। আমরা বলেছি, এটা জেনোসাইড। এই জেনোসাইড যেন আর কোথাও না হয়। আইসিজেতে মামলা চলছে গাম্বিয়ার। আমি বলেছি, আপনারা তাদের সাহায্য করেন। তারা সায় দিয়েছেন।
এনআই/এসকেডি