মিরপুরে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ-ভাঙচুরের দিন
বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবিতে রাজধানীর মিরপুরের বিভিন্ন এলাকার সড়কে গার্মেন্টস শ্রমিকরা বিক্ষোভ-ভাঙচুর চালিয়েছেন। পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াও হয়েছে তাদের। বিকেলের দিকে সড়ক থেকে সরে যান শ্রমিকরা। শ্রমিকরা সরে গেলে মিরপুর এলাকায় পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে স্বাভাবিক হয় যানচলাচল।
রোববার (৫ জুন) সকাল থেকেই মিরপুর-১০ ও এর আশপাশের সড়কগুলোতে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন শ্রমিকরা। সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে শ্রমিকদের বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ হলেও দুপুর হতে হতে তারা সহিংস হয়ে ওঠেন। এ সময় বেশকিছু গাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি কয়েকটি ভবনে ভাঙচুর চালান শ্রমিকরা।
পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুপুরের পর অ্যাকশনে যায় পুলিশ। শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় শ্রমিকরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকলে দু-পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিকেলের দিকে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। পরে সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
দুপুরের দিকে মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বরে আন্দোলনরত শ্রমিকরা নির্বাচন কমিশনার মো.আলমগীর হোসেনকে তার গাড়িসহ অবরুদ্ধ করেন। পরে পুলিশি নিরাপত্তায় তিনি গোলচত্বরের পুলিশ বক্সে অবস্থান নেন। এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনারের গাড়ি ছেড়ে দিতে অনুরোধ করলেও ছাড়তে রাজি হননি শ্রমিকরা। পরে শ্রমিকদের হাত থেকে পুলিশ গাড়ি ছাড়ালে নির্বাচন কমিশনার আলমগীর হোসেন ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এক পর্যায়ে জলকামানসহ পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে যেতে থাকলে শ্রমিকরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ে। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে।
এ বিষয়ে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো.মাহবুব জানান, সকাল থেকেই পুলিশ আন্দোলনরত শ্রমিকদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু শ্রমিকরা দুপুরের দিকে বিভিন্ন স্থাপনা ও গাড়িতে ভাঙচুরের করলে তাদের থামানোর চেষ্টা করা হয়। পরে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করা হয়। শ্রমিকরা সরে গেলে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে।
সকাল থেকেই মিরপুর-১০, ১১, ১২ ও ১৪ নম্বর এলাকার আশে-পাশের সড়কে প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক জমায়েত হয়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন তারা। এতে প্রায় পুরো ঢাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
উল্লেখ্য আগে শনিবার (৪ জুন) বিকেলে বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে চলা বিক্ষোভে মিরপুরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) একটি গাড়ি ভাঙচুর করেন পোশাক শ্রমিকরা। এ সময় পুলিশের দুটি মোটরসাইকেলেও আগুন দেওয়া হয়।
এমএসি/আরএইচ