কবি সুফিয়া কামাল বাংলাদেশের নারী আন্দোলনের মশালবাহক

‘জননী সাহসিকা কবি সুফিয়া কামাল বাংলাদেশের নারী আন্দোলন-সংগ্রামের মশালবাহক ছিলেন।’
কবি সুফিয়া কামালের ১১১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সোমবার বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে মহিলা পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত এক স্মারক বক্তৃতায় বক্তারা একথা বলেন।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কবি সুফিয়া কামালের জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে এই স্মারক বক্তৃতা ও সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক কাবেরী গায়েন অনুষ্ঠানে ‘সুফিয়া কামাল ও নারীবাদী আন্দোলন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা করেন।
অধ্যাপক কাবেরী গায়েন বলেন, নারীর মুক্তিকে মানবমুক্তি হিসেবে দেখার যে মন্ত্র বেগম রোকেয়া ছড়িয়েছিলেন, সেই মন্ত্রে এবং কাজে দীক্ষিত ছিলেন বেগম সুফিয়া কামাল। তাকে কেন্দ্র করেই রোকেয়া পরবর্তী বাংলাদেশের নারী আন্দোলন অগ্রসর হতে থাকে। তার সাহিত্যিক অভিযাত্রায় বেগম রোকেয়ার নারীবাদী প্রভাব ছিল। পাশাপাশি নারী সাহিত্যিক হিসেবে তার লেখায় নারীর প্রতি সুষ্পষ্ট দায়বদ্ধতা দৃশ্যমান ছিল।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭০ সালে মহিলা পরিষদ গঠিত হবার পর এদেশের নারীদের আন্দোলন-সংগ্রামের ‘মশালবাহক’ হয়ে ওঠেন সুফিয়া কামাল।
মহিলা পরিষদ সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, কবি সুফিয়া কামালের জন্মবার্ষিকী পালনের সঙ্গে নারী আন্দোলন ও সামাজিক আন্দোলনের একটা আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। মহিলা পরিষদের দীর্ঘ পদযাত্রায় কবি সুফিয়া কামালের প্রজ্ঞা, আদর্শ , নারীবাদী মতবাদ ও অনুপ্রেরণা একাত্ম হয়ে রয়েছে। যা আজকের স্মারক বক্তৃতায় অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। এ অনুপ্রেরণা আগামী দিনের নারী আন্দোলনকে আরও গতিশীল করবে।
মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, শত বছর আগে কবি সুফিয়া কামাল রক্ষণশীল পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে আত্মমর্যাদাসম্পন্ন, স্বাধীনচেতা এবং অসাম্প্রদায়িক মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠেন। পরবর্তী সময়ে বেগম রোকেয়ার নারীবাদী দর্শনের সঙ্গে তার সংশ্রব ঘটে এবং তার নানা ধরনের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নারী মুক্তির আন্দোলন অগ্রসর হতে থাকে।
তিনি নারী মুক্তির আন্দোলন, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক আন্দোলন এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনসহ বিভিন্ন সৃষ্টিশীল উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
কবির জন্মদিন উপলক্ষে বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী ইফ্ফাত আরা দেওয়ানকে এবছর কবি সুফিয়া কামাল সম্মাননা দেওয়া হয়।
ইফ্ফাত আরা দেওয়ান কবির স্মৃতিচারণ করে বলেন, শৈশব থেকেই কবি সুফিয়া কামালের সঙ্গে সময় কেটেছে। আমার সংগীত কর্মসহ সব কর্মকাণ্ডের প্রেরণাদাত্রী ছিলেন তিনি।
মহিলা পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক উম্মে সালমা বেগমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কবি সুফিয়া কামালের পারিবারিক সদস্য সাঈদা কামাল এবং সংগঠনের অর্থ সম্পাদক দিল আফরোজ বেগম।
এসএম
