পরিচ্ছন্ন ও সুস্থ জীবন বস্তিবাসীদের মৌলিক অধিকার

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেছেন, পরিচ্ছন্ন ও সুস্থ জীবন বস্তিবাসীদের মৌলিক অধিকার। তাদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষার অধিকারকে সবার আগে স্থান দিতে হবে।
সোমবার (২৯ আগস্ট) হাজারীবাগের বালুর মাঠ এলাকার সালাম সর্দার রোডে বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাসনলেজ (বারসিক) আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন তিনি।
আবু নাসের খান বলেন, হাজারীবাগে একসময় ট্যানারি দিয়ে ঘেরা ছিল। সেই ট্যানারি উচ্ছেদ হলেও তার যে দীর্ঘমেয়াদী পরিবেশগত বিরূপ প্রভাব, সেই প্রভাব আজও বিদ্যমান। এই অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্যগত সমস্যার দিকে তাকালেই তা বোঝা যায়, এখানকার বায়ু ও পানি কী পরিমাণ দূষিত। এখানের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা বলে তেমন কিছুই নেই। নারী শিশুরা মারাত্মক সমস্যায় জর্জরিত। কিন্ত এই সাধারণ বস্তিবাসীরাই ঢাকা শহরকে তথা দেশকে বাঁচিয়ে রেখেছে।
তিনি বলেন, বস্তির পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত যে সংকট তৈরি হয়েছে তার প্রধানতম কারণ হলো সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাব। অথচ দেশে পরিবেশ আইন, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আইনসহ কত আইন রয়েছে। বস্তিবাসীদের সন্তানদেরও শিক্ষার অধিকার রয়েছে আর এজন্য অবশ্যই এ অঞ্চলে অতিসত্তর সরকারি স্কুল স্থাপন করা দরকার। স্থানীয় প্রশাসনসহ সব দায়িত্বশীল অংশ নিয়ে করে এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
ইয়ুথ সদস্য পূজা রানী মন্ডল বলেন, আমাদের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো এই অসুস্থ পরিবেশ বসবাস করা। সঠিকভাবে ময়লা না নেওয়ার কারণে এবং তার সঠিক ব্যবস্থাপনা না হওয়ার জন্যই আমাাদের নানান সমস্যার মধ্যে থাকতে হয়। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলসহ সকল দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আরও উদ্যোগী ভূমিকা নিতে হবে।
সিবিও নেতা আমির হোসেন বলেন, আমরা বস্তিবাসীরা ঢাকা কলিংয়ের উদ্যোগে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করছি একটা সুস্থ পরিবেশের জন্য। কিন্তু সেই সুস্থ পরিবেশ আজও পাচ্ছিনা। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, আমাদের এলাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করে পরিবেশসম্মত স্কুল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপন করুন।
মানবন্ধনে অন্যান্য বক্তারা বলেন, বস্তির ঘরে ঘরে মানুষের নানান রোগ বেড়েই চলেছে। কিন্তু তাদের চিকিৎসার জন্য স্থানীয় কোনো ব্যবস্থা নেই। বস্তিবাসীদের বেশি টাকায় বেসরকারি ক্লিনিকে ও হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হয়। যার সামর্থ্য বস্তিবাসীদের নেই। কিছু হলেই স্থানীয় ডিসপেনসারি থেকে দেওয়া হয় এন্টিবায়োটিক, যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
মানববন্ধন থেকে সরকারের কাছে ৩ দফা সুপারিশ জানানো হয়েছে। সুপারিশগুলো হলো পরিচ্ছন্ন পরিবেশের জন্য ডাস্টবিন/সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা, জনকল্যাণে স্থানীয় পর্যায়ে কমিউনিটির জন্য স্বাস্থ্য কেন্দ্র করা এবং পরিবেশসম্মত সরকারি স্কুল তৈরি করা।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন বারসিকের প্রজেক্ট ম্যানেজার ফেরদৌস আহমেদ, বস্তিবাসী নেত্রী হোসনে আরা বেগম রাফেজা, সিবিও নেতা রুমা আক্তার, ইয়ুথ আব্দুর রহিম, পূজা রানী মন্ডল, মাহিয়া রহমান ঐশী, সাবিনা নাঈম, কামরুন নাহার প্রমুখ।
এমএইচএন/এমএ